প্রতিটি বিষয়েই আগ বাড়িয়ে কথা বলে গণমাধ্যমের হাতে মসলা তুলে দেবেন না- নিজের দলের সাংসদ ও বিধায়কদের এই পরামর্শ দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রবিবার নরেন্দ্র মোদি অ্যাপের (নমো অ্যাপ) মাধ্যমে দলের সাংসদ ও বিধাযকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে দলের জনপ্রতিনিধিদের বিতর্কিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার উপদেশ দেন মোদি। ধর্ষণসহ একাধিক ইস্যুতে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর এই পরামর্শ।
প্রায় ২ মিনিটের ভিডিও চ্যাটে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্যেশ্যে মোদির বার্তা ‘কখনও আমাদের কর্মীরা বলেন গণমাধ্যম এটা করে, গণমাধ্যম ওটা করে, কিন্তু আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি যে আমরাও ভুল করি এবং গণমাধ্যমের কর্মীদের হাতে মশলা তুলে দিই, যেন আমরা কত বড় বিজ্ঞজন। চিত্রসাংবাদিকদের দেখলেই আমরা বড় বড় ইস্যুগুলিতে বিশ্লেষণ করতে ছুটে যাই। এটা গণমাধ্যমের দোষ নয়, আমাদের নিজেদেরকে সংযত হতে হবে। একমাত্র যারা এই বিষয়ে দায়িত্বশীল, তাদেরই বলা উচিত। সকলেই যদি বলতে শুরু করে তবে আসল ইস্যুটাই বিপথগামী হয়ে যাবে এতে আমাদের দেশ, দল এবং ব্যক্তিগত ভাবমূর্তির ওপরও প্রভাব পড়বে’।
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, ‘চার বছর আগে যখন সরকার গঠন হয়েছিল, ৮-১০ সাংসদের সবকিছুতেই বলার অভ্যাস ছিল কিন্তু আমি তাদের সাথে কথা বলার পর গত তিন বছরে তারা এমন কোন রকম মন্তব্য করেননি।
মোদি জানান, ‘গণমাধ্যমকে আমাদের দোষারপ করা উচিত নয়, গণমাধ্যম তার কাজ করছে। আমাদের কর্তব্য হচ্ছে সবকিছু ইস্যুতেই নিজেদের জড়িয়ে না ফেলা। এই বিষয়ে যাদের এক্তিয়ার রয়েছে একমাত্র তারাই বলবে’।
তবে দলের নেতা-মন্ত্রীদের উদ্যেশ্যে মোদির এই বার্তার পরেও ধর্ষণ নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্ক তৈরি করেছেন দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার। কাঠুয়া ও উন্নাওয়ের গণধর্ষণ নিয়ে রবিারই সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ‘…এমন ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক, কিন্তু কখনও কখনও এসব বন্ধ করা যায় না। এত বড় দেশে দুই-একটা এমন ঘটনা ঘটলে তা নিয়ে এত হইচই হওয়ার কিছু নেই’।
কর্নাটকে আসন্ন বিধানসভার নির্বাচন উপলক্ষ্যে সুলেভাবি এলাকায় একটি প্রচারণায় কয়েকদিন আগেই বিজেপি বিধায়ক সঞ্জয় পাটিল বলেছিলেন, এই নির্বাচন ভালো সড়ক বা খাবার পানির বিরুদ্ধে লড়াই নয়, এটা হিন্দু-মুসলিমের লড়াই।
গত মঙ্গলবার তামিলনাড়ুর এক নারী সাংবাদিকের গালে রাজ্যটির রাজ্যপাল বনওয়ারিলাল পুরোহিত’এর চড় মারা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা এস.ভি.শেখর ফেসবুকে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন, ‘রাজ্যপালের উচিত ফিনাইল দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা’।