‘সড়ক দুর্ঘটনা আসলে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’

Slider খুলনা রাজনীতি

312143_177

বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির গোলটেবিলে বক্তারা বলেছেন, রাজধানীসহ সারা দেশে গণপরিবহনে নৈরাজ্য চলছে। এক বাসের সঙ্গে অন্য বাসের রেষারেষি ও বেপরোয়া চলাচলের কারণে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে যাত্রীরা। রাজধানীতে ৮৭ শতাংশ বাস-মিনিবাস ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে বেপরোয়া চলাচল করে, ফলে এসব বাসে দুর্ঘটনায় কারও হাত, কারও পা, কারও মাথা বা কারও জীবনও চলে যায়। বিআরটিএ ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সড়কের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে জরিমানা আদায়ে ব্যস্ত ট্রাফিক পুলিশ। এছাড়াও পরিবহনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে চাঁদাবাজি, টোকেন বাজি, জরিমানা আদায় ও অর্থ আত্মসাতের মহা উৎসবে মেতে উঠেছে।

রাজধানীতে ৮৭ শতাংশ বাস-মিনিবাস নৈরাজ্য-বিশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘সড়কে নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনা উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা একথা বলেন। বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি এই গোলটেবিল এর আয়োজন করে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, মানবাধিকারের অন্যতম শর্ত মানুষের বেচেঁ থাকার অধিকার, আমাদের সড়কে এই অধিকার অব্যবস্থাপনা ও নৈরাজ্যের চাকায় পৃষ্ঠ হচ্ছে। উন্নত বিশ্বে আইনের প্রয়োগ থাকলেও আমাদের এখানে প্রকৃত পক্ষে আইনের কোন প্রয়োগ নেই।

ডিটিসিএ’র সাবেক নিবার্হী পরিচালক ড. এস এম সালেহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, আমরা ইতিমধ্যে একটি সুনিদিষ্ট পরিকল্পনা সরকারের কাছে দায়ের করেছি। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে ঢাকা শহরের গণপরিবহনের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনা দুর হবে।
বুয়েটের অধ্যাপক ড. মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, মাদকের হাত থেকে পরিবহন সেক্টরকে রক্ষা করা না গেলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানী ও ক্ষয়ক্ষতি আরো বাড়তে থাকবে। তিনি অনতিবিলম্বে নৈরাজ্য বন্ধে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিষ্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, আইন না মানার প্রবণতাকে সড়কে নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী করেন। যারা নিহত হন শুধু তারাই মারা যান না পুরো ঐ পরিবারটি মারা যান। কেননা ঐ পরিবারের পরিচালক যখন মারা যায় তখন পরিবারটি আর অসহায় হয়ে পড়ে।

বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এ সব দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলতে চাই। কেন না, আমাদের সড়কের সমস্ত অব্যবস্থাপনা, বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যকর পরিবেশে আমাদের যাতায়াতে বাধ্য করা হচ্ছে। নগরীর প্রতিটি বাস মিনিবাসের ব্যবসা মূলত চালকরা নিয়ন্ত্রণ করছে।

সড়ক ব্যবস্থাপনা ও সড়কের শৃঙ্খলা মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়ছে দাবি করে বক্তারা বলেন, বর্তমানে সারা দেশে নিবন্ধিত ৩১ লাখ যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে, অনিবন্ধিত ভুয়া নাম্বার ধারি ও অযান্ত্রিক যান মিলে প্রায় ৫০ লাখ যানবাহন রাস্তায় চলছে, যার ৭২ শতাংশ ফিটনেস বিহীন। অন্যদিকে সারাদেশে ৭০ লাখ চালকের মধ্যে বিআরটিএ লাইসেন্স আছে মাত্র ১৬ লাখ চালকের হাতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *