১৮ বছর ধরে চাকরি করে আসা বিশ্বস্ত প্রহরীর নেতৃত্বে আমিন জুয়েলার্সে দুর্ধর্ষ ৬৮০ ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রহরী সোবহান, তার স্ত্রী, মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে চুরির আসল ঘটনা। পুলিশ তাদের কাছ থেকে ৪৯৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। গ্রেফতার অন্যরা হলেন সোবহানের স্ত্রী আলেয়া বেগম, মেয়ে সীমা ও মেয়ের জামাই বিল্লাল হোসেন ওরফে বুলবুল। তবে এ ঘটনার সাথে জড়িত রাজমিস্ত্রি সাদ্দাম এখনো ধরা পড়েনি। উদ্ধার হয়নি বাকি ১৮২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার।
গতকাল দুপুরে গুলশান থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদ খান বলেন, আমিন জুয়েলার্সে চুরির পর গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর ও মাওয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোবহানসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। নিরাপত্তাকর্মী সোবহান ও রাজমিস্ত্রি সাদ্দাম পরিকল্পিতভাবে এই চুরির ঘটনা ঘটায়। ১৪ এপ্রিল শনিবার রাতে শোরুমের ছাদ কেটে ভেতরে ঢুকে স্বর্ণ ও টাকা চুরি করে তারা। পরে ছাদের কাটা অংশে ঢালাই দিয়ে বন্ধ করে তার ওপর একটি ড্রাম দিয়ে ঢেকে পালিয়ে যায়। এরপর ১৬ এপ্রিল সোমবার দোকান খুলে মালিক এই চুরি ঘটনা টের পান। পরদিন থানায় মামলা করলে পুলিশ তদন্তে নামে। এরপর ওই শোরুমের নিরাপত্তাকর্মী সোবহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সন্দেহ হলে তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে কাটাছেঁড়া দেখে এর কারণ জানতে চায় পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে চুরির ঘটনা স্বীকার করে সোবহান। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৪৯৮ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পয়লা বৈশাখ রাতে শোরুম বন্ধ হওয়ার পরপরই চুরির ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তাকর্মী সোবহানের বাড়ি গোপালগঞ্জে। চুরির পর তার স্ত্রী এসব স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গোপালগঞ্জের নিলফা গ্রামের নজরুলের বাড়ি থেকে ২৫৩ ভরি স্বর্ণসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি স্বর্ণ মাওয়া ও চাঁদপুর থেকে উদ্ধার করা হয়।
আমিন জুয়েলার্সের মালিক কাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, শোরুমের নিরাপত্তাকর্মী সোবহান ১৮ বছর ধরে কাজ করছে। সে খুব বিশ্বাসী ছিল। আমরা ভাবতেও পারিনি, সে এমন চুরির ঘটনা ঘটাবে। পয়লা বৈশাখে বিক্রি বেশি হয়। রাত ১০টার পর দোকান বন্ধ হয়। রোববার সাধারণত দোকান বন্ধ থাকে। সোমবার সকালে দোকান খোলার পর চুরির ঘটনা ধরা পড়ে।