সরকারি চাকরিতে বিদ্যামান কোটা প্রথার সংস্কার দাবিতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন করে আসছে চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা। সারা দেশে চলমান এ আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে চলমান এ আন্দোলনে ‘কোটা বিরোধ নয় বরং এর সংস্কার’ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘কোটা ব্যবস্থা তুলে দেয়া’র বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবেন বলেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অধীনে শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনে রাজধানী এবং এর বাইরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও জেলা পর্যায়ে সংগঠিত আন্দোলনে এ পর্যন্ত ২৬২ জন আহত এবং ৪৪ জন আটকের বিষয় জানা গেছে। বুধবার নয়া দিগন্তকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান।
তিনি জানান, আন্দোলনে এ পর্যন্ত ২৬২ জন আহতের খবর জানা গেছে। এদের মধ্যে পুলিশ ও ছাত্রলীগের দ্বারা আহত হয়েছেন অনেকে। লাগাতার আন্দোলন চলাকালে শারীরিক দুর্বলতার কারণে অসুস্থ্য হয়েছেন অন্তত ৭জন। গত মঙ্গলবার রাতে সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের হামলায় আন্দোলকারী ৬ শিক্ষার্থী আহত হন। এদের মধ্যে মোরশেদা আক্তারকে গুরুতর আহত করা হয়। এর আগে গত রবিবার রাতে অর্ধ্বশতাকি আহত হয়।
রাশেদ জানান, ধারাবাহিক আন্দোলন চলাকালীন অন্তত ৪৪জন আটক হয়েছেন। গত পরশু পর্যন্ত জানা যায়, এদের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। কিছু সংখ্যক এখনো আটক আছে। তবে তাদের সংখ্যা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। লাগাতার আন্দোলনের কারণে এ তথ্য রাখা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি। তবে ৫০ শিক্ষার্থীকে আটক করে পরে ছেড়ে দেয়ার ঘটনা বাদে।
এদিকে, আন্দোলন চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনে হামলা, ভাঙচুরসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় শাহবাগ থানায় চারটি মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে মামলাগুলো করা হয়। তবে মামলায় কোনও আসামির নাম ও সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, ভিসির বাসভবনের হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করেছে। এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় শাহবাগ থানা থেকে দুটি এবং মোটর সাইকেলে আগুন দেয়ায় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পক্ষ থেকে করা একটিসহ মোট চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা করে আসামীর সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।