সৌদি আরবে কারাবন্দি যুবরাজ, মন্ত্রী, শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার তদন্ত ও আদালতে যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে গ্রেপ্তার হওয়ার পর যাঁরা সরকারের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে অভিযোগ নিষ্পত্তি করেননি, শুধু তাঁদের বিরুদ্ধেই এখন আইনি পথে অগ্রসর হচ্ছে সৌদি সরকার।
গতকাল রবিবার প্যান-আরব দৈনিক শারক আল আসওয়াতের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
এসব বন্দিকে জাতীয় নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক বিশেষ আদালতে তোলা হতে পারে বলে পত্রিকাটি জানিয়েছে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ গঠন করা হতে পারে। পত্রিকাটি এক কর্মকর্তা জানান, সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট পাবলিক প্রসিকিউটর ওই বন্দিদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন।
গত নভেম্বরে মুকুটধারী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে দুর্নীতির অভিযোগে যুবরাজ, মন্ত্রী, শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী মিলিয়ে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। গ্রেপ্তার করে তাঁদের রাজধানী রিয়াদের রিজ কার্লটন হোটেলে বন্দি করে রাখা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১১ জন যুবরাজ ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সৌদি রাজ পরিবারের সবচেয়ে সম্পদশালী ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী যুবরাজ আলওয়ালিদ বিন তালালও রয়েছেন।
গ্রেপ্তারের পর সরকার বন্দিদের ‘দুর্নীতির’ অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে মুক্তির প্রস্তাব দেয়। পরে যুবরাজ তালালসহ বেশির ভাগ বন্দিই অর্থের বিনিময়ে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে মুক্তি পান। তবে ৫৬ জন বন্দি এখনো অভিযোগের মীমাংসা করেননি। এ বিষয়ে গত জানুয়ারিতে সরকার বলেছিল, যাঁরা মীমাংসায় যাবেন না, তাঁদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
এই তদন্তে নিয়োজিত সৌদি আরবের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৌদ আল-হামাদ দৈনিক শারক আল আসওয়াতকে বলেন, বন্দিদের সবার বিরুদ্ধেই প্রসিকিউশনের জন্য আদালতে অভিযোগ পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই অর্থপাচার, জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ রয়েছে।
সৌদ আল-হামাদ বলেন, ‘প্রতিটি মামলার বিচার আলাদাভাবে করা হবে। কারো বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অর্থপাচারসংক্রান্ত বিভাগ খতিয়ে দেখবে। কারো অভিযোগ খতিয়ে দেখবে জাতীয় নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদসংক্রান্ত বিভাগ।’ সৌদ আল-হামাদ জানান, তদন্তের পর প্রত্যেককে সংশ্লিষ্ট আদালতে তোলা হবে।
সূত্র : এএফপি, টাইমস অব ইন্ডিয়া