ভুটানের সঙ্গে দুই প্রটোকল স্বাক্ষরিত

জাতীয় টপ নিউজ

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং ঢাকায় ভুটানের দূতাবাস নির্মাণে প্লট বরাদ্দে দেশটির সঙ্গে দুটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রটোকল অনুযায়ী আন্তবাণিজ্যে ৯০টি পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে দুই দেশ। আর ঢাকায় দূতাবাস নির্মাণে রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকায় ভুটানকে প্লট দেওয়া হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের উপস্থিতিতে শনিবার বিকালে এই দুটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ এবং ভূটানের অর্থমন্ত্রী নরবু ওয়াংচুক বাণিজ্য চুক্তিতে সই করেন। আর ভুটানের দূতাবাসের জন্য রাজধানীর বারিধারায় জমি দেওয়ার চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং সফরকারী দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিনজিন দর্জি স্বাক্ষর করেন। এর আগে বিকেঁলে শেরিং তোবগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানান।
পরে দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে একান্ত বৈঠকের পর বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেরিং তোবগে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। চুক্তি সইয়ের পর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেন, দুই দেশের মধ্যে আগের চুক্তিতে ৭৪টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া ছিল। এখন এই সংখ্যাটি বাড়িয়ে ৯০টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আমরা পদ্মা সেতুর জন্য ভূটান থেকে বোল্ডার আনতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেব। দুই দেশের রপ্তানি বাড়াতে আমরা যা যা করার করব।
অচিরেই দুই দেশের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের কথা বলেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী। ব্যবসা-বাণিজ্যে আমরা উভয় উভয়কে সহায়তা করব, বলেন তিনি। জলবিদ্যুৎ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে তোফায়েল আহমদ জানান। ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে শনিবার সকালে শেরিং তোবগে ঢাকায় নামলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর একটি ‘উদয় পদ্ম’ ফুল গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতিদানকারী প্রথম দেশ ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই তোবগের প্রথম ঢাকা সফর। তিনি গত বছরের জুলাইয়ে ভুটানের সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছিলেন, ভুটানের জনগণের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তোবগে বাংলাদেশে আসার আগ্রহের কথা বলেন। তা শোনার পর শেখ হাসিনা তাকে আমন্ত্রণ জানান। ভুটানের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দলও প্রধানমন্ত্রী তোবগের সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছে।
বাংলাদেশ-ভুটান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ বছরে দুই কোটি ৬০ লাখ ডলার। সম্প্রতি বাংলাদেশের উদ্বৃত্ত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ কেনার বিষয়ে আগ্রহ জানিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় বড় পাথর বা বোল্ডার রপ্তানির বিষয়েও আগ্রহ রয়েছে তাদের। বাংলাদেশ সফরে তোবগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তিন দিনের সফর শেষে আগামী ৮ ডিসেম্বর ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।image_159713.1

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *