মেন্যুতে তেতো খাবারের কথা শুনলেই আমাদের মুখ শুকিয়ে যায়। টক, ঝাল, মিষ্টির মতো ডায়েটে তেতো রাখাও কিন্তু জরুরী। তেতো খাবারের মাঝে করল্লা কিন্তু আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী। তেতো বলে অনেকেই এই সবজিটি খেতে ভালোবাসেন না। করল্লার তেতো ভাব কমাতে রান্না করার আগে কিছুক্ষণ লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে পারেন। আজ তাহলে করল্লার গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে রাখুন, তাতে হয়তো পরবর্তীতে তেতো খাওয়ার সময় খারাপ লাগবে না!
কী কী রয়েছে করল্লায়?
– প্রচুর পরিমানে আয়রণ রয়েছে। আয়রণ হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে।
– করল্লায় যথেষ্ট পরিমানে বিটা ক্যারোটিন আছে। এমনকি ব্রকলি থেকেও দ্বিগুণ পরিমানে বিটা ক্যারোটিন রয়েছে এতে। দৃষ্টি শক্তি ভাল রাখতে ও চোখের সমস্যা সমাধানে বিটা ক্যারোটিন উপকারী।
– পালংশাকের দ্বিগুণ ক্যালসিয়াম ও কলার দ্বিগুণ পরিমান পটাশিয়াম করল্লায় রয়েছে। দাঁত ও হাড় ভাল রাখার জন্য ক্যালসিয়াম জরুরী। ব্লাড প্রেশার মেনটেন করার জন্য ও হার্ট ভাল রাখার জন্য পটাশিয়াম প্রয়োজন।
– করল্লায় যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন-সি রয়েছে। ভিটামিন সি ত্বক ও চুলের জন্য একান্ত জরুরী। ভিটামিন সি আমাদের দেহে প্রোটিন ও আয়রন যোগায় এবং ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধক ক্ষমতা গড়ে তোলে।
– ফাইবার সমৃদ্ধ করল্লা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা কমায়।
– করল্লায় রয়েছে ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, ম্যাগনেসিয়াম, ফলিক এসিড, জিঙ্ক, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম।
অসুখ নিরাময়ে সাহায্য করে।
– ডায়বেটিসের পেশেন্টের ডায়েটে করল্লা রাখুন। করল্লায় রয়েছে পলিপেপটাইড পি, যা ব্লাড ও ইউরিন সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করল্লার রস ও করল্লা সিদ্ধ খেতে পারেন।
– নানা রকমের ব্লাড ডিজঅর্ডার যেমন স্ক্যাবিজ, রিং ওয়র্ম এর সমস্যায় করল্লা উপকারী। ব্লাড পিউরিফিকেশনে সাহায্য করে।
– স্কিন ডিজিজ ও ইনফেকশন প্রতিরোধে সাহায্য করে।
করল্লা পাতার রসের উপকারিতা:
– করল্লা পাতার রস খুবই উপকারী। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে, নানা ধরনের ইনফেকশন থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। এনার্জি ও স্টেমিনা বাড়িয়ে তুলতেও করল্লা পাতার রস সাহায্য করে।
– অতিরিক্ত এলকোহল খাওয়ার অভ্যাস থেকে লিভার ড্যামেজড হলে , সে সমস্যায় করল্লা পাতার রস দারুন কাজে দেয়। শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন ফ্লাশ আউট করতে সাহায্য করে।
– কলেরা বা ডায়রিয়ার প্রথম পর্যায়ে উচ্ছে পাতার রস খেতে শুরু করলে ভাল। উচ্ছে পাতার রস, লেবুর রস ও পেঁয়াজের রস মিশিয়ে খেলে উপাকার হয়।
– ব্লাড ডিজঅর্ডার সমস্যায় লেবুর রস ও করল্লা পাতার রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
– করল্লা পাতার রসে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, ফেরেনজাইটিসের মতো সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
– সোরিয়াসিসের সমস্যা, ফাংগাল ইনফেকশন প্রতিরোধ করা সম্ভভ হয়।
করল্লা সংরক্ষণের টিপস:
– ফ্রিজের ভেজিটেবল বাস্কেটে করল্লা রাখুন। বেশিদিন উচ্ছে ফেলে রাখবেন না। বাজার থেকে কেনার ৩-৪ দিনের মধ্যেই খেয়ে ফেলা ভাল।
– রুম টেম্পারেচারে অন্যান্য সবজির সঙ্গে করল্লা রাখলে পেকে গিয়ে হলুদ হয়ে যেতে পারে। করল্লা আলাদা রাখার চেষ্টা করুন।
– পরিষ্কার পানিতে করল্লা ভাল করে ধুয়ে রান্না করুন।
সতর্কতা:
– একদিনে অতিরিক্ত পরিমানে করল্লা খাবেন না। তলপেটে সামান্য ব্যথা হতে পারে।
– ডায়বেটিস পেশেন্টরা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিন সারাদিনে কতটা পরিমাণে তেতো খেতে পারবেন। সুগারের ওষুধের সঙ্গে তেতোর ভারসাম্য বজায় রাখা দরকার।
– প্রেগনেন্ট মহিলারাও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করল্লার রস খাবেন।
– See more at: http://www.priyo.com/2014/12/06/121980.html#sthash.XDzNNoor.dpuf