শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক পাঁচ বছরেই সিংহ প্রজননে দেশ সেরা

Slider বাংলার সুখবর সারাদেশ

dig

আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্টাফ রিপোর্টার:
শক্তির দিক থেকে প্রাণীজগতের মধ্যে অন্যতম অবস্থান সিংহের। শৈশবে সিংহ মামার গল্পের সাথে সকলেই পরিচিত। এশিয়ার বিভিন্ন জঙ্গলে সিংহের দেখা মিললেও বাংলাদেশে সিংহের দেখা মেলেনি কখনও। সারাবিশ্বেই ভৌগোলিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আজ সিংহের সংখ্যা হাতে গুনা কিছু সংখ্যক। আমাদের দেশে সিংহের অবস্থান বেশির ভাগই খাঁচার ভেতর।

বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার প্রাণীকূলের বংশবৃদ্ধি ও দর্শনার্থীদের বিনোদনের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৩ সালে গাজীপুরের শালবনের বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক গড়ে তুলে। আর তাঁরপর থেকেই সফলতা শুরু।

প্রতিষ্ঠাকাল ২০১৩সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে দক্ষিন আফ্রিকার জোহার্নেসবাগ থেকে মেসার্স ফ্যালকন ট্রেডার্সের মাধ্যমে ২টি পুরুষ ও ৫টি মাদি সিংহ আনা হয়। এছাড়াও আনা হয় আরো ৪টি সাদা প্রজাতির সিংহ। আফ্রিকার পরিবেশের সাথে দেশের আবহাওয়ার তেমন তারতম্য না থাকায় খুব দ্রুতই দেশের পরিবেশে মানিয়ে নিয়েছে তাঁরা। গত পাঁচ বছরেই এই সাফারী পার্ক এখন সিংহ প্রজননে দেশের সেরা। বর্তমানে সাফারী পার্কে সিংহ পরিবারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫টিতে। কোর সাফারীর সিংহ বেষ্টনীতে এখন ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত সিংহ রয়েছে। খুব দ্রুতই কিছু সিংহ অন্যত্র স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের বণ্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান জানান, আমরা সাফারী পার্কে সম্পূর্ণ বণ্য পরিবেশে প্রাণীদের আবাসভূমি গড়ে তুলেছি। তাদের খাদ্যাভাসে বিশেষ নজরদারীতেই মূলত সিংহ প্রজননে সফলতা পেয়েছি। এ পার্কের মতো আর দেশের কোথাও এখন এত সিংহ নেই। প্রজননে সাফল্য পাওয়ায় সাফারী পার্কের চাহিদা মিটিয়ে এখন কিছু সিংহ অন্যত্র স্থানান্তর জরুরী। না হলে ইনব্রিডিং (আন্ত:প্রজনন) এর মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। সবচেয়ে অবাকের বিষয় আমরা আফ্রিকান ব্রাউন সিংহ হতে চারটি সাদা সিংহও পেয়েছি।

পার্কের অপর বণ্যপ্রাণী পরিদর্শক মো. সরোয়ার হোসেন খান জানান, পুরুষ সিংহের সাধরণত ওজন হয় ১৫০ এবং ২৫০ কেজি। স্ত্রীরা (সিংহী) সাধারণত ১১০ থেকে ১৯০ কেজি পর্যন্ত হয়। একমাত্র পুরুষ সিংহদের কেশর থাকে। সিংহ মাংসাশী প্রাণী। বিভিন্ন জাতের হরিণ, জেব্রা, বুনো মহিষ, জিরাফ, শূকর ইত্যাদি খাদ্য থাকলেও সাফারী পার্কে এদেরকে গবাদী পশুর মাংস খেতে দেয়া হয়।

তিনি আরো জানান, ২ থেকে ৩ বছর বয়সে সিংহী প্রজননে সক্ষম হয়। শিশু সিংহ জন্মের পর অন্ধ থাকে; তারা এক সপ্তাহ বয়সে চোখ খুলে এবং ২ সপ্তাহ বয়স না হলে তাঁরা ভালো করে চোখে দেখতে পারে না। যখন দেখা যায় সিংহী নিজের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত খাবার নিয়ে যাচ্ছে তখনই প্রথম জানা যায় বাচ্চা প্রসব করেছে। তারা প্রাকৃতিক পরিবেশে সন্তানের পরিচর্যা নিজেরাই করে থাকে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন জানান, এপার্কের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে প্রাণীরা বন্য পরিবেশে উন্মুক্ত থাকে। আর দর্শনার্থীরা আবদ্ধ অবস্থায় গাড়িতে করে তা উপভোগ করে। বন্য পরিবেশ ও কর্তৃপক্ষের নজরদারীর কারণেই এখানে প্রাণীদের বংশবৃদ্ধি বাড়ছে। আর সিংহ প্রজননে এখন এপার্কই দেশের সেরা অবস্থানে রয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *