চীন ও রাশিয়ার অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক স্বার্থের কাছে রোহিঙ্গাদের মানবতা হার মেনেছে। জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো ক্ষমতার অধিকারী দেশ দু’টি রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা চালানোর জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে রেখেছে। ভারতও একই কারণে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে মিয়ানমারের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি থেকে বিরত রয়েছে। এই ইস্যুতে প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্রের কাউকে অসন্তুষ্ট না করার নীতি অনুসরণ করছে দিল্লি। চীন, রাশিয়া ও ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও ভূরাজনৈতিক কৌশলের কারণে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না।
এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জোরালো কোনো পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করছে। পশ্চিমাদের আশঙ্কা, অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হলে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা অং সান সু চি বিপাকে পড়বেন। এতে করে সামরিক বাহিনী সু চিকে কোণঠাসা করে ফেলার সুযোগ পাবে। পরিণতিতে মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় পশ্চিমাদের দীর্ঘ দিনের বিনিয়োগ বিফলে যাবে।
এ কারণে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নির্মূল অভিযান চালানো হলেও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের মতো কঠিন সিদ্ধান্তে যায়নি পশ্চিমা দেশগুলো। এর পরিবর্তে ইইউ মিয়ানমারের সামরিক নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ না জানানো এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলাকালীন রাখাইনে দায়িত্ব পালনকারী প্রধান সেনাকর্মকর্তার ওপর সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এমনকি রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় হলেও তাদের রক্ষায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব উত্থাপন ছাড়া রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে ওআইসির দৃশ্যমান কোনো ভূমিকা নেই। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রেও মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলোর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো নয়।
চীন, ভারত ও রাশিয়ার স্বার্থ : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চীন ও ভারতের স্বার্থ গভীর। রাখাইনে বন্দর স্থাপন করে আমদানি করা জ্বালানি তেল ভূমিবেষ্টিত কুনমিং পর্যন্ত নেয়ার জন্য পাইপলাইন স্থাপন করেছে চীন। আরো একটি পাইপলাইনের মাধ্যমে রাখাইন থেকে কুনমিংয়ে গ্যাস নেয়া হচ্ছে। আর ভারত কালাদান প্রকল্পের আওতায় রাখাইনের রাজধানী সিত্বেয় বন্দর স্থাপন করে নদী ও সড়কপথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামে যোগাযোগ স্থাপন করছে। উদ্দেশ্য, ভারতের ভূমিবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য সহজে পণ্য আমদানি-রফতানির সুযোগ সৃষ্টি।
বর্তমানে এসব রাজ্যকে অনেক পথ ঘুরে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দর ব্যবহার করতে হয়। চীন ও ভারত রাখাইনে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতাও রয়েছে। আর রাশিয়ার মূল স্বার্থ হচ্ছে মিয়ানমারে অস্ত্র বিক্রি এবং দেশটিকে পশ্চিমা প্রভাব থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখা। লন্ডনে এক রাশিয়ান দ্বৈতচর ও তার মেয়েকে বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে বর্তমানে মস্কোর সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনৈতিক যুদ্ধ চলছে। এ কারণে মিয়ানমার ইস্যুতে পশ্চিমাদের অবস্থানের বিরুদ্ধে রাশিয়া আরো কঠোর ভূমিকা নিতে পারে।
এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন নয়া দিগন্তের সাথে আলাপকালে বলেন, মানবিক ইস্যুর জন্য চীন বা রাশিয়ার অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসবে না। পরিবর্তন আসবে কেবল তখনই, যদি তাদের স্বার্থে বাধা আসে। এখন মিয়ানমারে চীন-রাশিয়ার স্বার্থ বেশ ভালোভাবেই সুরক্ষিত। তারা নিজেদের স্বার্থ দেখবে, আমাদেরটা নয়। স্বার্থের ব্যাপারে তারা কোনো সমঝোতা করবে না। নিরাপত্তা পরিষদে চীন-রাশিয়ার অবস্থান পরিষ্কার হয়েছে। তিনি বলেন, মিয়ানমারকে চাপ দিতে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। ছোটখাটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে না। তবে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউরোপ-আমেরিকার এ পর্যন্ত নেয়া সিদ্ধান্তগুলো একেবারে কিছু না করার চেয়ে ভালো। এটা অব্যাহত থাকলে অন্তত ইসুটা চাঙ্গা থাকবে। এতে অপরাধীরা কিছুটা হলেও অসুবিধায় পড়বে।
মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ কোনো ফল বয়ে আনবে কিনা জানতে চাওয়া হলে তৌহিদ হোসেন বলেন, কাজ হলে চাপেই হবে। অন্য কিছুতে হবে না। আমরা যুদ্ধ করে জায়গা দখলে নিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনে থাকার ব্যবস্থা করতে পারব না। তাই মিয়ানমারের ওপর চাপ দিতে সক্ষম -এমন শক্তিগুলোকে সক্রিয় রাখতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, চীন ও রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য। বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তায় তাদের দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু দেশ দুইটি নিজস্ব ক্ষুদ্র স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে পারেনি। এ কারণে রোহিঙ্গা সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনার সঠিকভাবেই রোহিঙ্গা সঙ্কটকে ‘জাতিগত নির্মূলের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। নিরাপত্তা পরিষদ এর দায় এড়াতে পারে না।
সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা সঙ্কটে মূলত মানবিক সহায়তা দিচ্ছে। মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কিছু হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য চীন একটি ভূমিকা পালন করেছে। চীনের সাথে অব্যাহতভাবে আমাদের যোগাযোগ রাখতে হবে, যাতে এই প্রভাবশালী আমাদের দেশটি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করে।
জাতিসঙ্ঘে তৎপরতা : চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে মিয়ানমার ইস্যুতে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব অনুমোদন করা যায় না। চীন এমনকি মিয়ানমার ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে কোনো আলোচনারও বিরোধিতা করত। তবে গত বছর ২৫ আগস্টের পর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো নজিরবিহীন নৃশংসতার কারণে বিশ্বজনমত প্রবলভাবে মিয়ানমারের বিপক্ষে চলে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে চীন ও রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমে রুদ্ধদ্বার এবং পরবর্তী সময়ে উন্মুক্ত আলোচনায় সম্মতি দেয়। গত ৬ নভেম্বর মিয়ানমার ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রেসিডেন্সিয়াল বিবৃতি গৃহীত হয়। এতে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে মিয়ানমারের সাথে আলোচনা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানানো হয়। এ ছাড়া ১৬ নভেম্বর জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে মিয়ানমারবিষয়ক একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়।
এতে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের একজন বিশেষ দূত নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়। প্রস্তাবে রাখাইন প্রদেশে অনতিবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করা, সবার জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাবে ২৫ আগস্টের পর থেকে রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার ওপর জোর দেয়া হয়। প্রস্তাবটি তৃতীয় কমিটির পাশাপাশি সাধারণ পরিষদের প্লেনারিতেও বিপুল ভোটে পাস হয়।
তবে সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক না হওয়ায় এর সাথে কেবল নৈতিক প্রভাব। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন নিতে হবে। আর সেখানেই বড় বাধা চীন ও রাশিয়া। সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব গ্রহণের চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেজ মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ দিতে পারেননি। গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে এ ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে গুতেরেজ বলেন, সবাই এটা মেনে নেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। তবে আমি আশা করি, শিগগিরই এর সমাধান হবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন দেখে গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসঙ্ঘের বিশেষ প্রতিনিধি এডামা দিয়াং বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে চীন ও ভারতকে কেবল রাজনৈতিক নয়, নৈতিক নেতৃত্বও দিতে হবে। এটা মানবতার বিষয়, যার সাথে মানুষের জীবন জড়িয়ে রয়েছে। বৃহত শক্তি হিসেবে চীন ও ভারতকে এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, রাখাইনে নৃশংসতা চালানোর সাথে জড়িতদের অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে এ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। গুরুতর অপরাধ অস্বীকার করার মিয়ানমারের প্রচেষ্টা হতবাক করার মতো। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদকে রাখাইনে নৃশংসতার সাথে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে কার্যকর পন্থা বিবেচনায় নিতে হবে। বিশ্ব এ ধরনের বর্বর আচরণ সহ্য করতে পারে না।
রাখাইনে ভারত ও চীনের যত প্রকল্প : ভারতের কালাদান প্রকল্প পাঁচটি পর্যায়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রথমেই রাখাইনে নির্মাণ করা হয়েছে পণ্যবাহী বড় জাহাজ ভেড়ার উপযোগী একটি বন্দর। এটি সিত্বে বন্দর নামে পরিচিত। দ্বিতীয় পর্যায়ে সিত্বে থেকে মিয়ানমারের পালিতওয়া পর্যন্ত ১৬০ কিলোমিটারজুড়ে কালাদান নদী ড্রেজিং করা হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে পালিতওয়া থেকে ভারতের মিজোরাম পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ দুই লেনের মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
চতুর্থ পর্যায়ে মিজোরামের ভেতরে তৈরি হয়েছে ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ দুই লেনের মহাসড়ক। এ সড়ক ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়ের সাথে (৫৪) কালাদান প্রকল্পকে যুক্ত করবে। পঞ্চমত, রাখাইনের পন্নাগুনে এলাকায় এক হাজার একরের একটা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে ভারত। এর পাশেই কাইয়াকপুতে চীনের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে।
২০০৮ সালে কালাদান প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালে তা চালুর কথা ছিল। তবে তিন বিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্প চলতি বছর চালুর চেষ্টা চলছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্বের জন্য চীনের প্রভাবকে দায়ী করা হচ্ছে।
এ ছাড়া ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মনিপুর থেকে থাইল্যান্ড পর্যন্ত একটি ত্রিদেশীয় সড়ক বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিংয়ের বিশেষ উদ্যোগ ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ মোকাবেলায় ভারত এক হাজার ৭০০ কিলোমিটারের মনিপুর-মান্দালয়-রাখাইন-ব্যাংকক হাইওয়ে নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান নেতাদের কাছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ পরিকল্পনার কথা ইতোমধ্যে তুলে ধরেছেন।
অন্য দিকে চীন রাখাইনের কাইয়াকপু বন্দর থেকে চীনের কুনমিং পর্যন্ত ৭৭০ কিলোমিটারের পাইপলাইন স্থাপন করেছে। দেড় বিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্পের মাধ্যমে চীন মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন উৎস থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কাইয়াকপু বন্দরে এনে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে কুনমিং নিয়ে যাবে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিকে এতদিন জ্বালানি তেল আমদানির জন্য দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর নির্ভর করতে হতো।
কিন্তু দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানা নিয়ে আসিয়ান দেশগুলোর সাথে চীনের বিরোধ দেখা দিয়েছে এবং এ বিরোধে যুক্তরাষ্ট্র ইন্ধন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তাই তেল আমদানির বিকল্প পথ হিসেবে কাইয়াকপু বন্দর আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ ছাড়া রাখাইন থেকে কুনমিং পর্যন্ত ৭৯৩ কিলোমিটারে গ্যাস পাইপলাইন চীন ২০১৫ সালেই চালু করেছে।