খালেদাকে বিদেশ পাঠালে মহা মুশকিলে পড়বে আ.লীগ!

Slider রাজনীতি

15771

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠালে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামীলীগ মহা মুশকিলে পড়ে যাবে বলে মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।  বিষয়টিকে খোদ আওয়ামীলীগও নিরাপদ মনে করছেন না। অনেকে হয়তো মনে করতে পারেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে দিলেই ঝামেলা শেষ।  আওয়ামীলীগের সামনে আর কোনো সমস্যা নেই।  কেউ কেউ হয়তো এটাও ভাবছেন যে, খালেদাকে একবার বিদেশে পাঠাতে পারলে নির্বাচনের আগে আর দেশে আসতে দেবে না সরকার।  কিন্তু বিষয়টি অত সহজ নয়।

খালেদা জিয়া যে কোনোভাবে একবার মুক্ত জীবনে ফিরতে পারলে রাজনীতির মোড় ঘুরে যেতে পারে। অসুস্থতার জন্য তাকে প্যারলে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠালে নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়া অবশ্যই দেশে ফিরতে চাইবেন।  তখন যদি সরকার তার ফেরা ঠেকাতে চায় তবে বহির্বিশ্বে ব্যাপক সমালোচিত হবে সরকার।  স্বৈরাচারী সরকারের সঙ্গে তুলনায় এসে যাবে বিষয়টি। অন্যদিকে নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে দেশে ঠুকতে দিয়ে আবারো কারাবন্দি করাও কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।  নির্বাচনের আগ মুহুর্তে যদি সরকার তা করতে যায় তবে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি কেউ রুখতে পারবে না। সম্ভবত নির্বাচন পূর্বসময়ে মুক্ত খালেদাকে পেতেই এধরণের একটি ছক করে রেখেছে বিএনপি।  তাছাড়া নির্বাচনের আগ মুহুর্তে বিএনপির কাছে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার চাইতে বিদেশে খালেদার অবস্থানও অনেক বেশি শক্তিশালী হবে বৈকি।

এদিকে খালেদা জিয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গতকাল রোববার বলেন, খালেদা জিয়া একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।  আমরা তার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে খোঁজখবর রাখছি।  আজও (রোববার) সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে চিকিৎসকরা তাকে দেখে এসেছেন।  তার পায়ে সমস্যা রয়েছে।  গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে প্যারল দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, যদি সে রকম অবস্থা তৈরি হয়, তাহলে আদালত ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।  অবশ্যই সরকার তার (খালেদা জিয়া) সুচিকিৎসার উদ্যোগ নেবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, দেশে প্রচলিত আইন আছে।  সেই আইন ও কারাবিধি অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।  তিনি আরো বলেন, আমাদের সাধারণ সম্পাদক স্পষ্ট বলেছেন, চিকিৎসকরা পরামর্শ দিলে বিএনপি চেয়ারপারসনকে প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানো হবে।

উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া বর্তমানে পুরান ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।  গত ২৮ মার্চ অন্য একটি মামলায় তাকে আদালতে হাজির করার কথা ছিল।  কিন্তু খালেদা জিয়া যেতে রাজি না হওয়ায় তাকে আদালতে পাঠানো যায়নি।  ফলে কারাগার থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে যে তিনি অসুস্থ থাকায় পাঠানো যায়নি।  আদালতে এ তথ্য যাওয়ার পর থেকেই খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে আলোচনা চলছে।  সেদিনই সিভিল সার্জন গিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন।  এর পর থেকে খালেদা জিয়া অসুস্থ বলে দাবি করছে বিএনপি।  ব্যক্তিগত চিকিৎসক দিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার দাবি জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত শুক্রবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, চিকিৎসক বোর্ড বললে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *