তার পিতা জি পার্থসারথীর বিভিন্ন নোটের ওপর ভিত্তি করে তিনি এ বইটি লিখেছেন। বইটি প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে মার্চের শেষের দিকে। ভারতের অনলাইন ডিএনএ সেই বইয়ের ওপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ১৬ই মার্চ। এদিন বিশেষ বৈঠক বসে ভারতের কেবিনেট কমিটি অন পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স (সিসিপিএ)। ওই বৈঠকে উপস্থিতরা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পরিকল্পনায় সম্মতি দেন। তাতে বলা হয়, ভারতের সেনাবাহিনীকে সরাসরি পেশোয়ারে পাঠানো হবে। এর মধ্য দিয়ে তখনকার পশ্চিম পাকিস্তান দখল করে নেয়া হবে। ওই বইয়ে বলা হয়েছে, পিএন হাকসার ছিলেন ইন্দিরা গান্ধীর মুখ্য সচিব। তিনি বাদে সিসিপিএ’র সব সদস্যই দেশভাগের বিরোধী ছিলেন। অর্থাৎ তারা পাকিস্তান দখল করে পুনরেকত্রীকরণের পক্ষে ছিলেন।
১৬ই ডিসেম্বর। ঢাকায় পাকিস্তান আত্মসমর্পণের ১৬ ঘন্টা আগে স্থানীয় সময় রাত একটায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অফিস সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভের একটি অত্যন্ত গোপন টেলিগ্রাম পায়। এর পরই ইন্দিরা গান্ধী তার সেনাপ্রধান স্যাম মানেকশর সঙ্গে কথা বলেন। ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন অশোক পার্থসারথী। তিনিও তার পিতার সঙ্গে সিসিপিএ’র ওইদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি লিখেছেন, সেনা প্রধানকে ইন্দিরা গান্ধী বলেন ‘স্যাম, পেশোয়ার পৌঁছাতে আপনার কত সময় লাগবে?’
এর জবাবে স্যাম মানেকশ বলেন, ‘তিন দিন ম্যাডাম’।
এরপর ইন্দিরা গান্ধী তাকে আবার বলেন, ‘আপনাকে খুব আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে’
স্যাম মানেকশ বলেন, ‘ম্যাডাম আমরা পূর্ব পাকিস্তানের পতন দেখেছি। সেনা সদর দপ্তরে আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে, আপনি এবং আপনার সহকর্মীরা আমাদের কাছে এই প্রশ্নটিই করবেন, যেটা আপনি আমাকে করেছেন। তাই আমরা আগেভাগেই হোমওয়ার্ক করে রেখেছিলাম। আমরা পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতিতে আছি।’
মন্ত্রীরা, সংশ্লিষ্ট সচিবগণ ও সার্ভিসের প্রধানরা যারা উপস্থিত ছিলেন সিসিপিএ’র বৈঠকে তারা সবাই চেয়েছিলেন পাকিস্তান দখল করে নিতে। তবে এক্ষেত্রে পিএন হাকসারই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করছিলেন। তিনি জানতে চাইছিলেন, ভারত কি পশ্চিম পাকিস্তান শাসন করবে কিনা। তখন হাকসার বলেছিলেন, যদি তাই হয় তাহলে প্রথমেই পশ্চিম পাকিস্তানের সব মানুষকে আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে। স্লোগান দিতে হবে ‘ইয়াহিয়া খানের পতন হোক, টিক্কা খানের পতন হোক’। হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই। কিন্তু ছয় মাস পরে ওই একই জনগণ স্লোগান দেবে ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর পতন হোক, হিন্দুরা ফিরে যাও’।