খালেদা জিয়ার মামলায় আইনি সহায়তা দিতে কার্লাইলকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির পক্ষ থেকে এই ঘোষণা আসার পর নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এ বিষয়ে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে কার্লাইলের মতামত জানতে চাওয়া হয়। ই-মেইলে প্রথম আলোর করা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
ব্রিটিশ এই আইনজীবী বলেন, লর্ড সভার সদস্যপদের সঙ্গে তাঁর আইনজীবী হিসেবে কাজের কোনো সম্পর্ক নেই। একজন পেশাজীবী হিসেবে তিনি খালেদা জিয়ার পক্ষে পরামর্শ দেবেন।
হাউস অব লর্ডসের প্রয়াত সদস্য লর্ড অ্যাভবেরি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে বিবদমান প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সময়-সময় লন্ডনে সংলাপের আয়োজন করতেন। ২০১৬ সালে লর্ড অ্যাভবেরি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর লর্ড সভার সদস্য হিসেবে কার্লাইল ওই সংলাপ আয়োজনের দায়িত্ব নেন। তাঁর আমন্ত্রণে এ পর্যন্ত লন্ডনে দুই দফা সংলাপের আয়োজন হয়।
একটা ‘মধ্যস্থতাকারীর’ ভূমিকায় থাকা অবস্থায় বিএনপি নেত্রীর আইনজীবী হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব নেওয়া কতটা যৌক্তিক—এমন প্রশ্নের জবাবে কার্লাইল বলেন, ‘ওটা সম্পূর্ণ ভিন্ন দায়িত্ব’।
যদি সম্ভব হয় সংলাপের আয়োজনও চালিয়ে যাবেন বলে জানান কার্লাইল।
খালেদা জিয়ার পক্ষে এমন কী ভূমিকা রাখবেন, যা বিএনপি নেত্রীর বাংলাদেশের আইনজীবীরা পারছেন না—প্রশ্নে কার্লাইল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনের শাসনের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের আদালত সরকার থেকে কতটা স্বাধীন এবং ক্ষমতার বিভাজনের বিষয়টি কার্যকর বলে প্রমাণ হওয়া উচিত।’
কার্লাইল নিজেকে আন্তর্জাতিক আর্থিক অপরাধ বিষয়ের অভিজ্ঞ আইনজীবী বলে দাবি করেন।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টাকরেন কার্লাইল। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রহণযোগ্যতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। এই ভূমিকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কার্লাইল দাবি করেন, একজন সাংসদ ও রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি ট্রাইব্যুনালের ঘাটতি নিয়ে কথা বলেছিলেন। কারণ, ওই ট্রাইব্যুনাল বিচারের আন্তর্জাতিক মান রক্ষার প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের সময় জামায়াতের পক্ষে কথা বলেছিলেন বলে অভিযোগ আছে—এমনটি স্মরণ করিয়ে দিলে কার্লাইল বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য ও মানহানিকর। তিনি কোনো বাংলাদেশি রাজনৈতিক দলের পক্ষে কথা বলেন না।
বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে বেশ আগ্রহভরে পড়াশোনা করেছেন জানিয়ে কার্লাইল বলেন, তাঁর বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনা আছে। যখন প্রয়োজন হবে, তিনি বাংলাদেশে যাবেন।