কুমিল্লার নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে খালেদা জিয়াকে

Slider রাজনীতি

108769_Khaleda-1

 

 কুমিল্লা: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় যাত্রীবাহী নৈশকোচে দুর্বৃত্তদের পেট্রোল বোমা হামলায় ৮ যাত্রী হত্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আগামী ২৮শে মার্চ কুমিল্লার আদালতে হাজির করার জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট (পি.ডব্লিউ) ইস্যু করেছে আদালত।
ঢাকার গুলশান থানার একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে কুমিল্লার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৫নং আমলী আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক মুস্তাইন বিল্লাহ সোমবার বিকালে এ আদেশ দেন। ওই আদেশটি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া।
আদালত সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুমিল্লার ৫নং আমলী আদালতে চলমান জি.আর ৫১/১৫ মামলায় যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছিল তা ইতোপূর্বে ঢাকার গুলশান থানায় প্রেরণ করা হয়। এ মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য সোমবার গুলশান থানার ওসি এ.বি সিদ্দিক স্বাক্ষরিত একটি আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে কুমিল্লার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৫নং আমলী আদালতের বিচারক মুস্তাইন বিল্লাহ আগামী ২৮শে মার্চ কুমিল্লার আদালতে খালেদা জিয়াকে হাজির করার জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট (পি.ডব্লিউ) ইস্যুর আদেশ দেন।

বিকালে আদালতের আদেশটি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়। আদালতের ওই আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর সুব্রত ব্যানার্জি।

জানা যায়, বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধ চলাকালে ২০১৫ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি নৈশ কোচ (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৪০৮০) চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর নামক স্থানে পৌঁছুলে দুর্বৃত্তরা বাসটি লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে বাসের যাত্রীরা কোন কিছু বুঝে উঠার আগে আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলে ৭জন ও হাসপাতালে নেয়ার পর ১জনসহ মোট ৮ ঘুমন্ত যাত্রী মারা যায়। এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হয়ে পরদিন হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে থানায় পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে ৮ যাত্রী হত্যা মামলাটি কুমিল্লা ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী, মনিরুল হক চৌধুরী, জামায়াত নেতা ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরসহ ৭৭ জনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৬ই নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এ ২টি মামলার চার্জশিটে এজাহার বহির্ভূত বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরীসহ স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের আরও ৩০ জন নেতা-কর্মীকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। গত ২রা জানুয়ারি আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে মামলার আসামি পলাতক ৫৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। এর আগে ২০১৫ সালের ২৫শে জানুয়ারি গভীর রাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সদরের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হায়দারপুল এলাকায় একটি কার্ভাডভ্যানে আগুন দেয়ার ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায়ও বেগম খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে এবং স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের ৩২ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গত বছরের ৬ মার্চ কুমিল্লার একই আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এ মামলায় চার্জশিটের ৩২নং আসামি বেগম খালেদা জিয়া। এ নিয়ে কুমিল্লার আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে পৃথক ৩টি মামলা রয়েছে। এসব মামলা প্রসঙ্গে খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাজমুস সা’দাত জানান, ৮ যাত্রী হত্যা মামলায় আদালত সোমবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে পি.ডব্লিউ (হাজিরা পরোয়ানা) ইস্যু করেছেন। অপর ২টি মামলা উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত ছিল, কিন্তু পরে এ আদেশটি রহিত (ব্র্যাকেট) হলেও সংশ্লিষ্ট আদালতে ওই আদেশের কপি এখনো পৌছায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *