লতিফ সিদ্দিকীর ফাঁসি ও সব ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের দাবিতে রাজধানীর পুরানা পল্টনের হাউস বিল্ডিংয়ের সামনে অস্থায়ী মঞ্চে সমাবেশ শুরু করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করার কথা ছিল। কিন্তু অনুমতি না পাওয়ায় বেলা ২টায় পল্টনে সমাবেশ শুরু করেছে দলটি।
এর আগে এদিন সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ওই এলাকায় ঝড়ো হতে থাকে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। বাইতুল মোকাররমের সামনে আবদ্ধ ওই সড়কেই জুমার নামাজ আদায় করেন তারা।
বেলা ১২টার পর পল্টন ও দৈনিক বাংলা মোডে ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মহাসমাবেশ শুরু করেছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
শুক্রবার দুপুর দুইটায় রাজধানীর পল্টন মোড় থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটের মাঝখানে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশ চলাকালীন সিপিবির অফিস বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে আশেপাশের এলাকার দোকানপাটও।
ট্রাকের অস্থায়ী মঞ্চে দলটির নেতারা অবস্থান নিয়েছেন। বিকেল চারটার দিকে ওই মঞ্চে উঠবেন ইসলামী আন্দোলনের আমির চরমোনাই পীর মাওলানা রেজাউল করিম।
ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগরী আমির এটিএম হেমায়েত উদ্দীন বলেন, সরকার চাপে পড়ে সমাবেশ করতে দিয়েছে। হরতাল ঠেকাতে আজকের সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে।
এর আগে বেলা ১১টায় পল্টন মোড় থেকে দৈনিক বাংলা পর্যন্ত সড়কটি দখলে নেয় সারা দেশ থেকে আসা সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুর সোয়া একটায় তারা রাস্তায় আদায় করে জুমার নামাজ। ইমামতি করেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ মাদানী। যদিও একই সময় বায়তুল মোকাররমেও নামাজ আদায় হচ্ছিল।
জুমার নামাজের পরই বিক্ষোভ করতে থাকে আগত নেতাকর্মীরা। এরপর দুপুর দুইটায় অস্থায়ী মঞ্চে সমাবেশ শুরু করে ইসলামী আন্দোলন।
বিকেল পৌনে তিনটায় এ রিপোর্ট লেখার সময় মঞ্চে উপস্থিত হন দলটির মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইউনূছ আহমাদ, মহানগর সভাপতি এটিএম হেমায়েত উদ্দীন, ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরিফুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের সহকারি মহাসচিব আবদুল কাদেরসহ অর্ধশতাধিক আলেম।
এসব বক্তারা বলেন, সরকার আমাদের দাবি মানেনি। তাই সমাবেশ করা হচ্ছে। সংসদের আগামী অধিবেশনে নাস্তিকদের শাস্তির বিধান রেখে আইন পাস না করা হলে আরও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তারা আরও বলেন, আল্লাহ ও তার রাসূলের অবমাননা করে লতিফ সিদ্দিকী ফাঁসির দণ্ডের অপরাধ করেছে। এ অপরাধ মোচন হবে ফাঁসির মাধ্যমে। তার ফাঁসি না হলে বাংলার ঘরে ঘরে আগুন জ্বলে ওঠবে।
তারা হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, প্রচলিত আইনের ফাঁক গলিয়ে লতিফ সিদ্দিকী ক্ষমা পেলে আগামী নির্বাচনে সরকার রেজাল্ট পাবে।
প্রসঙ্গত, সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ফাঁসির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পূর্বঘোষিত সমাবেশ কর্মসূচি ছিল। শুক্রবার এ সমাবেশ আয়োজনে ইসলামী আন্দোলন অনুমতি না পাওয়ায় সকাল থেকে পল্টন দখলে মরিয়া হয়ে ওঠে নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে প্রায় দশ হাজার নেতাকর্মী সড়কে উপস্থিত হলে পুলিশ কার্যত বাধা তুলে নেয়। অবশ্য প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেয়া না হলেও পল্টনে সমাবেশ মেনে নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সানোয়ার হোসেন বলেন, সমাবেশের অনুমতি ছিল না। তাই, প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করতে দেয়া হয়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ইসলামী আন্দোলন জানায়, শুক্রবার সমাবেশ করতে না দিলে রোববার হরতাল পালন করা হবে।
এদিকে, সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। পল্টন মোড় থেকে প্রেসক্লাব, দৈনিক বাংলা, জিরো পয়েন্ট, বিজয় নগর মোড়, কাকরাইল মোড়সহ আশেপাশের এলাকায় প্রায় কয়েক প্লাটুন পুলিশ রয়েছে। রয়েছে সাঁজোয়া যান, জলকামান।