সীমান্তে মিয়ানমারের আরও বাঙ্কার, সেনা বৃদ্ধি

Slider জাতীয়

298324_177

 

 

 

 

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে নতুন করে আরও সৈন্য বাড়িয়েছে মিয়ানমার। সেই সঙ্গে কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে তৈরি করা হচ্ছে আরও বাঙ্কার। শুক্রবার দুই দেশের পতাকা বৈঠকের পর সৃষ্ট উত্তেজনা কিছু সময়ের জন্য প্রশমিত হলেও শনিবার থেকে আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকালও তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্তে নতুন করে সৈন্য বাড়ানো হয়েছে এবং মিয়ানমার সেনা ও বর্ডার গার্ড পুলিশকে বাঙ্কার খনন করতে দেখা গেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

শুক্রবার বিকালে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সীমান্তে টহল দেওয়ার ক্ষেত্রে এবং ফাঁকা গুলি ছোড়ার ক্ষেত্রেও বিজিবিকে পূর্বাবহিত করা হবে বলে কথা দেয় মিয়ানমার সেনারা। কিন্তু শনিবার থেকে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় তারা নতুন করে আরও সৈন্য বাড়িয়েছে। তৈরি করছে নতুন বাঙ্কারও। এতে শূন্যরেখার প্রায় ৬ হাজার রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ-উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সীমান্তে মিয়ানমারের সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বিজিবিও তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে।

বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, শুক্রবার পতাকা বৈঠকে মিয়ানমার বিজিপি দাবি করেছে— তারা নিজেদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে সৈন্য মোতায়েন ও টহল বৃদ্ধি করেছে। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে সীমান্তে টহল দিতে হলে বিজিপি ও বিজিবি যৌথভাবে টহল দেবে এবং কোনো কারণে নিরাপত্তা জোরদারের কোনো প্রশ্ন আসলে তারা আমাদের আগেই অবহিত করবে। কিন্তু তারা আমাদের অবহিত না করেই সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ করেছে। তবে আমরাও সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

তুমব্রু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন জানান, সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। অনেকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। ইতিমধ্যে কেউ কেউ বাড়িঘর ছেড়ে দূরে আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও অবনতি হয়েছে। মিয়ানমার নতুন করে সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধি করায় আতঙ্ক বেড়েছে। তিনি জানান, মিয়ানমার গতকাল আ?রও শতাধিক সেনা বৃদ্ধি করেছে। ১ মার্চ সীমান্তে ৭ ট্রাক সেনা বৃদ্ধি করা হয়। ২ তারিখ সকালে সেনা সদস্যরা সরে যায়। পরে পতাকা বৈঠক শেষে আবারও তারা সীমান্তে অবস্থান নেয়।

গতকাল আ?রও শতা?ধিক সেনা সদস্য বৃ?দ্ধি করে?ছে।

এদিকে গতকাল সকালে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার সামরিক পিকআপ, ট্রাক ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিপুলসংখ্যক বিজিপি সদস্য অবস্থান নেয় শূন্যরেখা থেকে মাত্র ১৫০ গজ ভিতরে। এ সময় তারা সীমান্ত ঘেঁষে বাঙ্কার খোঁড়ার কাজও করে। ফলে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ও সীমান্তবর্তী বাঙালিদের মধ্যে আতঙ্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়াও মিয়ানমার সেনাবাহিনী শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গাদের সরে যাওয়ার জন্য গতকালও মাইকিং করেছে বলে জানা গেছে।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় গত ৬ মাস ধরে অবস্থান করে আসছে প্রায় ৬ হাজার রোহিঙ্গা। এদের মধ্যে বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে— এরকম একটি গোষ্ঠীর আস্তানা রয়েছে, এরকম একটি গোপন সংবাদ রয়েছে মিয়ানমার বিজিপির কাছে। তাই তারা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বলে জানিয়েছে বিজিবির কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *