যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপ-সহকারী ও জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ পরিচালক লিসা কার্টিস বাংলাদেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
আজ রোববার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সাথে সাক্ষাতকালে তিনি এ মনোভাব পোষণ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সরকারও একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে চায়। এ লক্ষে নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে লিসা কার্টিস রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, রাখাইনে যে সহিংসতা হয়েছে, তার তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করাটা জরুরি। এই নৃশংসতার সাথে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারকে রাখাইনে অনূকুল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা কাজ অব্যাহত রাখব।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে বিস্তৃত পরিসরে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের মধ্যে অর্থনীতিসহ অনেক ইস্যু রয়েছে। বাংলাদেশ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।
লিসা কার্টিস দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর সাথে বৈঠক করেন।
এছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গুলশানের বাসায় লিসা কার্টিসের সাথে দেখা করেন।
মার্কিন দূতাবাস থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতের সময় চাওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।
ভারত সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে
দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সাথে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি সারা বিশ্বের সঙ্কট। প্রতিবেশী হিসেবে ভারত এ সঙ্কট উত্তরণে বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য সারা বিশ্বের অনেক কিছু করার আছে।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, আগামী বর্ষায় ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কী ধরনের সহযোগিতা ভারত সরকার দিতে পারে তা নিয়ে হাইকমিশনারের সাথে আলোচনা হয়েছে। আমাদের চাহিদার কথা বলেছি। তিনি দিল্লি গিয়ে তার সরকারের সাথে আলোচনা করে কী দিতে পারবেন তা ঠিক করবেন।
ত্রাণমন্ত্রী বলেন, শরণার্থীদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ শিশু ও ৩০ হাজার গর্ভবতী নারী রয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা চেয়েছি। বর্ষা মৌসুমে রান্নার জন্য জ্বালানি কাঠের স্বল্পতা দেখা দেয়। এ জন্য রোহিঙ্গাদের জন্য বিকল্প জ্বালানি সরবরাহে সহযোগিতা চেয়েছি। এ মৌসুমের জন্য শুকনা খাবার সরবরাহেও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।