মুক্তিযুদ্ধে চার দশকের বেশি সময় পরেও এদেশে অনেক মানুষ আছেন যারা পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখে। এদেশের তরুণ প্রজন্মের একটা অংশ এখনও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে। কারণ তাদের সামনে ভুল ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। ভুল বোঝানো হয়েছে। ইদানিং কালে সকল কাজের কাজী হয়ে গেছে ইন্টারনেট। এদেশের অধিকাংশ মানুষ ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার না করে অকারণে মূল্যবান সময় ব্যয় করে। তাদের উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার পরামর্শ দিলেন জাতীয় ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
এর আগেও অনেক সাক্ষাতকারে মাশরাফির মুখে বারবার উঠে এসেছে মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা। মুক্তিযোদ্ধাদের তিনি বড় সম্মানের জায়গায় বসিয়েছেন। সবময়ই বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কোনো তুলনা হয়না। আজ প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করা ‘প্রজেক্ট লন্ডন-১৯৭১’ এর আয়োজনে ‘কুইজে একাত্তর’ নামের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সেই মুক্তিযুদ্ধ আর মুক্তিযোদ্ধাকে জানতে বললেন জনপ্রিয়তম এই অধিনায়ক।
আজশনিবার সকালে ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে মাশরাফি মঞ্চে আসলে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে মোবাইলে ছবি তোলায়। এই দৃশ্য দেখে বেশ হতাশ হয়ে ম্যাশ বলেন, ‘গোটা বাংলাদেশ এখন মোবাইলে ঢুকে গেছে। আজ আমরা যে আয়োজনে এসেছি, সে আয়োজনে যারা বক্তব্য রাখলেন তাদের বক্তব্য আপনাদের মনে কোনো আবেগ সৃষ্টি করতে পেরেছে বলে মনে হয় না। সবাই এখন মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত।’
‘এখন যদি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে প্রশ্ন করি, আপনারা মোবাইল বের করে উত্তর খুঁজবেন। এটা তো হওয়ার কথা ছিল না। এটা বড় দুঃখজনক। পড়ালেখা, ব্যবসা বা আমার খেলাধুলা, যাই বলি না কেন, প্রতিদিন ১ ঘণ্টা সময় বের করতে পারব না, এটা কিন্তু আমরা বলতে পারব না। ১৫-২০ দিন টানা একটু একটু করে জানুন মুক্তিযুদ্ধকে। ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিন। দেখবেন একদিন সবার মনে একটা আবেগের জায়গা তৈরি হয়েছে।’
তরুণ প্রজন্মের যারা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানে না তাদের নিয়ে সোশ্যাল সাইট এবং মিডিয়া মজা না করার আহ্বান জানান ম্যাশ। এই না জানার পেছনের কারণ অনুসন্ধান করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এরা কেন মুক্তিযুদ্ধকে জানে না, তা ফাইন্ড আউট করুন। পরিবারকে, স্কুলকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। যারা কিছু জানে না, তাদের নিয়ে এভাবে নিউজ করাও কিন্তু আমাদের জন্য সম্মানজনক কিছু নয়।’