নিম্ন তাপমাত্রায় আরও একটি রাত অতিবাহিত করলো ইউরোপের বিভিন্ন স্থানের লোকজন। সাইবেরিয়া থেকে ধেয়ে আসা বাতাসে ঠাণ্ডা এবং তুষারপাতের মাত্রা বেড়ে যাওয়াও ওই অঞ্চলে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। খবর বিবিসি’র।
হিমবাহ ও ভারী তুষারপাতের কারণে বিভিন্ন স্থানের রাস্তা-ঘাট, রেল সেবা এবং স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। তুষারপাতের কারণে বিভিন্ন বিমানবন্দরের কয়েক শ’ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
অস্বাভাবিক ঠান্ডার প্রকোপ ভূমধ্যসাগরের দক্ষিণেও অনুভূত হচ্ছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ২১ জনই মারা গেছে পোল্যান্ডে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়ে ছিলেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে বলেছে, এই তীব্র ঠাণ্ডায় হতদরিদ্র, গৃহহীন ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ওপর বড় ধরনের বিপদ বয়ে আনতে পারে। কারণ আশ্রয়ের অভাবে তারা খোলা আকাশের নিচেই থাকছেন। ফলে প্রচন্ড ঠান্ডায় এসব লোকজন ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যারা ঠাণ্ডাজনিত রোগে ভুগছেন, বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরা এবং দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বা যাদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা রয়েছে তারাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরের বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। পরে তুষার সরিয়ে পরে আবার বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু করা হয়।
অপরদিকে ফ্রান্সের মনপেল্লিয়ের শহরের কাছে একটি সড়কে প্রায় দুই হাজার গাড়ি নিয়ে আটকা পড়েন চালকরা। বেশিরভাগ চালকই অভিযোগ করেছেন যে, রাস্তায় তাদের ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটকা পড়ে থাকতে হয়েছে।
আমস্টারডামের শিফোল এয়ারপোর্টও ঠাণ্ডা বাতাসে কাবু। কেএলএম এয়ারলাইন্স তাদের বেশকিছু ফ্লাইট বাতিল করেছে এবং কিছু দেরিতে ছাড়ছে।
ডাবলিন এয়ারপোর্ট তুষার ও প্রচণ্ড বাতাসে মারাত্মক বিঘ্নে পড়ে। লন্ডন, প্যারিজ ও ব্রাসেলকের মধ্যে চলাচলকারী ইউরোস্টারের অনেকগুলো রেল সার্ভিস বাতিল করতে হয়।
পোল্যান্ডের মতো প্রায় একই ধরনের অবস্থা স্পেন ও ইতালিতে। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গত রোববার থেকে এ পর্যন্ত আবহাওয়াজনিত কারণে স্লোভাকিয়ায় মারা গেছেন ৭ জন। এবং সাম্প্রতিক সময়ে চেক রিপাবলিকানে মারা গেছেন ছয় জন।
গৃহহীন লোকজন রয়েছেন সবচেয়ে ঝুঁকিতে।
লিথুনিয়ায় ৫ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে। ফ্রান্সে ৪ জন, সার্বিয়া, ইতালি, স্লোভেনিয়া ও রোমানিয়ায় ২ জন করে এবং ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডসে ১ জন করে মৃত্যুর খবর দিয়েছে এএফপি।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে কর্তৃপক্ষ গৃহহীন ৩ হাজার বাসিন্দার জন্য জরুরি শেল্টারের ব্যবস্থা করেছে।