তবে ছাত্রলীগের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে গুলি ছুড়েছে পুলিশ। আর ককটেল বিষ্ফারণ ঘটিয়েছে জামায়াত শিবিরের লোকেরা।
এমন দাবি করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব চৌধুরীও।
তিনি বলেন, সম্মেলনে বক্তারা জামায়াত-শিবির বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এরপরই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। জামায়াত শিবিরের লোকজনই সম্মেলনে এসে সংঘর্ষ বাধিঁয়েছে। তিনি আরো অভিযাগ করেন, সোমবার নগরীর লালদিঘী মাঠে নগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্মরণ সভায়ও সংঘর্ষ বাধিয়েছে শিবিরের লোকজন।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুয়ায়ী আজ সঙ্গলবার সকাল ১০টায় নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউটে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন শুরু হয়। সকাল সোয়া ১১টায় সম্মেলন উদ্ধোধন করেন আমন্ত্রিত প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
আবু তৈয়ব চৌধুরী জানান, বেলা পৌনে ১২টার দিকে সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। তখনই শুরু হয় উত্তেজনা, পাল্টাপাল্টি শ্লোগান। তাদের থামাতে ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে বক্তব্য বন্ধ করে দেন জাকির।
এই পরিস্থিতির মধ্যে বক্তৃতা দিতে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সাকিব হাসান সৈয়দ। এসময় সম্মেলন কক্ষের পশ্চিম-দক্ষিণ কোণায় মুর্হুমুর্হু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় রাউজান আসনের সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীর অনুসারী রাউজান উপজেলা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে অন্তত ১৩ জন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়।
হাতাহাতি থামানোর চেষ্টায় বার বার আহ্বান জানান গণপূর্তমন্ত্রীসহ উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতারা। এসব আহ্বান উপেক্ষা করে মারামারি চলতেই থাকে। পরে মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন মাইকে বলেন, হামলাকারীরা বহিরাগত। এরা সংগঠনের কেউ নয়।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তাদের অনেকে মঞ্চ থেকে উঠে যান। একপর্যায়ে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। ফলে আতঙ্কিত হয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করে। এতে পণ্ড হয়ে যায় ছাত্রলীগের সম্মেলন।
শেষে পুলিশের কড়া প্রহরায় গণপূর্তমন্ত্রীসহ অতিথিরা সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন। এরপর সম্মেলনস্থলে রাউজান ছাত্রলীগের একটি অংশ মঞ্চ দখল করে এবিএম ফজলে করিমের পক্ষে শ্লোগান দিতে থাকেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন জানান, দু‘পক্ষের মারামারির কারণে সম্মেলন বন্ধ হয়ে গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থানে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। বড় কিছু হয়নি। তবে পুলিশের গুলি চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। কারা গুলি চালিয়েছে সে প্রশ্নেও সঠিক কোন তথ্য তিনি দিতে পারেননি।
সম্মেলনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এমএ সালাম, মাহফুজুর রহমান মিতা এমপি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।