শ্রীমঙ্গল(মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: দীর্ঘ ১৫ ঘন্টা পর সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও রেলস্টেশনের স্টেশন মাষ্টার মো.আব্দুর রহিম মানবজমিনকে বলেন- শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে উপবন ট্রেনের লাইনচ্যুত ১১ টি বগির উদ্ধারকাজ ও লাইনের মেরামত শেষে রেললাইন স্বাভাবিক হওয়ার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ রেলওয়ের উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী কুলাউড়া এরফানুর রহমান।
আজ সকালে উপবন ট্রেনের উদ্ধার কাজ পরিদর্শনে আসেন শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সংসদীয় এলাকার এমপি সাবেক চীফ হুইপ ড.উপাধ্যক্ষ মো.আব্দুস শহীদ,জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম,পুলিশ সুপার মো.শাহজালালসহ রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। ঘটনাস্থল থেকে উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি রেলপথ মন্ত্রী মো.মুজিবুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তখন রেল মন্ত্রী জানান, দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে ঢাকা বিভাগীয় ট্রান্সপোর্টেশন অফিসার মো.শফিকুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা। উক্ত কমিটি ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক মো.গাওস আল মুনীর এর নিকট আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিবেন।
ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রকৌশলী মুজিবুর বলেন, রাতে সাতগাঁও রেল স্টেশন অতিক্রমের পর ট্রেনের একটা আন্ডারগিয়ার বা ট্রেনের ‘পুলিং রড’ ভেঙে লাইনের ‘পয়েন্ট অ্যান্ড ক্রসিং’ এর কয়েকটি ব্লকের মধ্যে পড়ে যায়। এতে ব্লক ভেঙে ট্রেনের ১১টি বগি লাইনচ্যুত হয়। শুক্রবার সকাল ৬টায় কুলাউড়া ও আখাউড়া থেকে আসা দুটি রিলিফ ট্রেন উদ্ধার কাজ শুরু করে বিকেল চারটা নাগাদ পুরো লাইনের মেরামত কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়।
উপবন ট্রেনের গার্ড(পরিচালক) মো.জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, তার ধারণা রেললাইনের নাট বল্টু-ক্লিপ-হুক ছুটে সরে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা হতে পারে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রেল লাইনের রক্ষানাবেক্ষনের অভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোবাশশেরুল ইসলাম জানান, ‘ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় কয়েকশ’ যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন। ট্রেনটিতে পেছনের বগিতে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানও ছিলেন। অর্থ প্রতিমন্ত্রীর পিএস মুঠোফোনে বিষয়টি রাত ১টা ৩৫ মিনিটে আমাকে জানান। এর পরই জানি শ্রীমঙ্গল থানার ওসি ঘটনাস্থলে পৌঁছে অর্থ প্রতিমন্ত্রীকে একটি প্রাইভেট গাড়িতে করে হবিগঞ্জ জেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবলে এলাকায় পৌঁছে দেন। সেখান থেকে নিজস্ব গাড়িতে করে সড়ক পথে তিনি ঢাকায় ফেরেন প্রতিমন্ত্রী।’
দুর্ঘটনার পর রাতে ট্রেনের যাত্রীসাধারণ চরম দূর্ভোগে পড়েন। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য শ্রীমঙ্গল থানার ওসি কেএম নজরুলের নেতৃত্বে পুলিশের চারটি টিম দূর্ঘটনাস্থলে রাতভর উপস্থিত থেকে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে যানবাহনের সুব্যবস্থা করে দেন।
অনেক যাত্রী জানান,সাতগাঁও স্টেশন বাজার থেকে চড়ামূল্যে ভাড়া দিয়ে সিএনজি অটোরিক্সা যোগে শ্রীমঙ্গল শহরে এসে হানিফ-শ্যামলী বাস কাউন্টারে পৌছান তারা। পরে সেখান থেকে নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা হন।