গত পাঁচ মাস ধরেই আলোচনায় রয়েছে পেঁয়াজ। ৩০ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে ১৬০ টাকায় উঠেছে। আবার নামতে নামতে ৫০ থেকে ৫৫-তে ঠেকেছে। কিন্তু পেঁয়াজ নিয়ে মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা এখনো কাটেনি। তাদের বক্তব্য, অন্যান্য বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে এসে ভরা মওসুমে এক কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ টাকা। এবার এখনো ৫০। মওসুম শেষে কী পরিণতি দাঁড়াবে এবার?
পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি কারণ দেশে ওপর দিয়ে যাওয়া তিন দফা বন্যা। সাথে যুক্ত হয় পেঁয়াজ আমদানির প্রধান বাজার ভারতে বন্যায় পেঁয়াজের চাষ ব্যাহত হওয়ার ঘটনা। অক্টোবর মাসের শেষের দিকে দেশের বাজারে বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। এরপর দফায় দফায় বেড়ে দেশী পেঁয়াজের দাম পৌঁছায় কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয় সে সময়।
গতকাল শুক্রবার রাজধানী ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা কমে এসেছে পেঁয়াজের দাম। কিন্তু দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের চেয়ে তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ভারত থেকে আমদানিকৃত বড় পেঁয়াজ। দেশে উৎপাদিত ছোট পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে। অন্য দিকে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ভারত থেকে আমদানি করা বড় পেঁয়াজ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে একরকম বাধ্য হয়ে দাম কমিয়েছেন তারা। আমদানি বাড়ায় কমে এসেছে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, আদা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, দেশী নতুন রসুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং আমদানি করা বড় রসুন ১২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি আমদানি করা মসুরের ডাল ৮০ থেকে ৮৫ এবং দেশী মসুরের ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মুগ ডাল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, ছোলার ডাল ৯০ থেকে ১১০ টাকা, সয়াবিন তেলের লিটার ১০০ থেকে ১০৮ টাকা এবং চিনির কেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা বেড়েছে সবজির দাম। ফুলকপি ৩০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, খিরা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মটরশুটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা এবং লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। গত সপ্তাহের মতো আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা দরে।
ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি সপ্তাহে বাজারে লাউ ও টমেটোর সরবরাহ বেড়েছে। ফলে আগের সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কম। সপ্তাহের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি কমেছে লাউয়ের দাম। গত সপ্তাহে যে লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হয়েছিল গতকাল তা ৪০ থেকে ৬০ টাকায় নেমে এসেছে বলে জানান তারা।
বাজারে গতকাল প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতলা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, সিলভার কার্প ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙ্গাশ ১১০ থেকে ১৫০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ও দেশী মাগুর ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায়, ইলিশ কেজি প্রতি (মাঝারি) ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা, প্রতি পিস ইলিশ (ওজন ৫০০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা।
প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকা, লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, দেশী মুরগি প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, পাকিস্তানি লাল মুরগি কেজি প্রতি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর গোশত ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা এবং খাসির গোশত ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিমের হালি ২৮ থেকে ৩০ টাকা এবং হাঁসের ডিম বিক্রি হয় ৪৮ থেকে ৫২ টাকা হালি।