দেড় বছর আগে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়ার পর আবার সেই পদে আসীন হলেন কে পি শর্মা অলি। বৃহস্পতিবার দেশটির রাজধানী কাঠমুন্ডুতে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ৬৫ বছর বয়সী এই নেতা। গত বছর অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক নির্বাচনে পার্লামেন্টে দুই- তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তার দল। বৃহ¯পতিবার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা পদ ছাড়ার পর অলি’কে সন্ধ্যায় সিংহদরবার ভবনে তাকে শপথ পাঠ করিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবি ভাণ্ডারি। এ খবর দিয়েছে আলজাজিরা।
খবরে বলা হয়, গত অক্টোবরে সবাইকে অবাক করে দিয়ে একটি দু’টি দল নিয়ে বামপন্থী জোট গঠন করেন সাবেক কমিউনিস্ট বিপ্লবী অলি।
তার গঠিত দুই দল বিশিষ্ট জোটের একটি দল হচ্ছে-নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি ইউনিফাইড মার্ক্সিস্ট-লেনিন্সিটের(ইউএমএল) ও অপরটি হচ্ছে সিপিএন-এমসি। নির্বাচনে জয়ী হয় জোট। অলির জয় নেপালের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা ঘটিয়েছে। ২০০৮ সালে স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে দেশটিতে। এরপর এই প্রথম দেশটিতে গণতান্ত্রিক উপায়ে কোন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ঝলক সুবেদী বলেন, রাজতন্ত্রের অবসান ঘটার পর প্রজাতন্ত্রের দিকে নেপালের যাত্রার একটি মুখ্য পদক্ষেপ ছিল এই নির্বাচন। তিনি বলেন, গত ৭০ বছরে আমরা অনেক রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছি- রাজতন্ত্র থেকে প্রজাতন্ত্রে এসেছি। প্রথমবারের মতো আমাদের ইতিহাসে, জনগণ দ্বারা নির্বাচিত একটি প্রশাসন সংবিধান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এটা নেপালের বহু বছরের রাজনৈতিক সংগ্রামের ফল। সুবেদী আরো বলেন, গত কয়েক বছরে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা- ২০১৫ সালে সংবিধানের ঘোষণা এবং স্থানীয়, প্রাদেশীক ও ফেডারেল পর্যায়ে সফল নির্বাচন এটা প্রমাণ করে যে, নেপালের জনগণ আসলেই সার্বভৌমত্ব উপভোগ করছে। তিনি যোগ করেন, ভারত ও রাজ প্রাসাদের মত ঐতিহ্যগত ও বহিরাগত খেলোয়াড়রা নেপালের রাজনীতির ভাগ্য নির্ধারণ করতো। কিন্তু এখন সেখানে তারা আর মুখ্য কোন ভুমিকায় নেই। এখন, ক্ষমতা নির্বাচিত কর্মকর্তাদের হাতে।
খাদগা প্রসাদ শর্মা অলি কে?
অলি’র জন্ম ১৯৫২ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি। তিনি নেপালের ঝাপা জেলায় বেড়ে ওঠেন। কিশোর থাকাকালীন অবস্থায় স্কুল ছেড়ে দেন। জড়িয়ে পড়েন স্থানীয় কমিউনিস্ট রাজনীতিতে। ১৮ বছর বয়সে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। মৌলবাদী কমিউনিস্ট রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে অলি ১৪ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করেন। ১৯৯১, ১৯৯৯, ২০০৮ ও ২০১৩ সালে পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। এর মধ্যে ১৯৯৪ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ২০০৭ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউএমএল তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করে