শিরোনাম দেখে হয়তো একটু অবাক হচ্ছেন। কিন্তু ঘটনাটা সত্যি। গ্লেন বার্গার নামের এক যুবক যিনি এক অদ্ভুত কাজে পারদর্শী। গল্পটা একটু খুলে বলা যাক। বার্গার তখন বেকার। কিছুতেই সে বুঝতে পারছে না কোন কাজ করলে সে আনন্দও পাবে, আবার অনেক টাকাও রোজগার করতে পারবে। বার্গারের সমস্যা হল গল্ফ ছাড়া তার আর কোন কিছু ভাল লাগত না। সারাদিন সে বসে থাকত গল্ফ কোর্সে। কিন্তু একসময় সে বুঝতে পারলে তার দ্বারা গল্ফ খেলোয়াড় হওয়া সম্ভব নয়। তাহলে উপায়! বার্গার ডুব দিল। হ্যাঁ, পানিতে ডুব দিল। খেলোয়াড়রা অনেক সময় প্র্যাকটিস, টুর্নামেন্টে গল্ফ বল মেরে কোর্সের বাইরে পাঠিয়ে দিত।
বলটা গিয়ে পড়ত সেই পুকুর, অথবা খাল, নদীতে। বার্গার ঠিক বলের নেশায় ঝাঁপ দিত পুকুর, ডোবা, হ্রদ, নদীতে। সারাদিন সেসব বল সে নিজের কাছে সংগ্রহ করতে লাগল। ধীরে ধীরে বল সংগ্রহ করাটা ওর নেশাতে পরিণত হল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাসের সব বাঘাবাঘা গল্ফ কোর্সের পুকুর/ডোবা/হ্রদে ঝাঁপ দিয়ে সে গল্ফ বল সংগ্রহ করতে লাগল। টাইগার উডস তখন মধ্যগগণে। টাইগারের গল্ফ স্টিকের আঘাতে কতগুলো বল উড়ে গিয়ে পড়ল পুকুরে। বার্গার খেলা শেষে সেসব, বল সংগ্রহ করতে ঝাঁপ দিত পুকুরে। অনেক সময় পানিতে বল কুড়োতে গিয়ে সাপ, কুমিরের সঙ্গেও সাক্ষাত্ হয়েছে। তবে এতে সে দমবার পাত্র ছিল না।
এমন করতে করতে ১৪ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। ২৬ এর যুবক বার্গার এখন চল্লিশের পরিণত লোক। এদিকে, বার্গারের ঝাঁপিতে তখন সংগ্রহের লক্ষ লক্ষ গল্ফ বল। প্রতিটা গল্ফ বলের ইতিহাসটাও বেশ স্মরণীয়। কোনটা টাইগার উডসের মারা বল, কোনটা ররি ম্যাকলরয়ের। বার্গার সেসব বল বিক্রি করতে শুরু করলেন। টাকার থলে ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করল তাঁর। ক’দিনের মধ্যেই সে লাখপতি হয়ে উঠল।
প্রতি বছর সে প্রায় দেড় লাখ বল পানি থেকে উদ্ধার করতে থাকল বার্গার। মাঝে-মাঝে সে সব বল গল্ফ ক্লাবে ফিরিয়ে দিয়ে, সে বল পিছু ২ ডলার করে নেয়। এতে তার মাসিক রোজগারও অনেক হয়।
সত্যি, দুনিয়াটা ভারী অদ্ভুত। ভালবেসে কোন কাজ করলে পর্বতেও ফুল ফোটানো যায়। বল কুড়িয়ে এনেও লাখপতি হওয়া যায়। এরই দৃষ্টান্ত বার্গার।