আনিসুল হকের ইতিহাসআশ্রয়ী উপন্যাস ‘আলো-আঁধারের যাত্রী’

Slider বিনোদন ও মিডিয়া

ansul-haq-5a814592e479d

 

 

 

 

 

‘১৯৫৭ সাল। ওই সময় দেশে বিমানবন্দর কমই ছিল। তখন সি-প্লেন ছিল তাই প্রচলিত এবং নিয়মিত। নদীর বুকে উড়োজাহাজ নেমে যেতে পারত।

তাজউদ্দীন আহমদ উত্তেজিত। সি-প্লেনে চড়া হবে।

তিনি শেখ মুজিবের কথামতো সঙ্গে নিয়েছেন আম, জাম আর লিচু। লিচু ভালো পাওয়া গেছে। তবে আম যা পাওয়া গেছে, তা টক হবে। খেতে টক হলেও বাইরে দেখতে উজ্জ্বল হলুদ। এক ঝুড়ি ফল আর শেখ মুজিবের চিঠি নিয়ে তেজগাঁও এয়ারপোর্টে ছোট্ট সাদা রঙের প্লেনে উঠে বসলেন।

মুজিব ভাই সবকিছুর ব্যবস্থা করেই রেখেছিলেন। ছোট্ট প্লেনে বসে সিটবেল্ট বেঁধে নিতে হলো। জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেন তাজউদ্দীন। রানওয়ের চারদিকে সবুজ। বড় বড় কাশঝাড়। প্লেন চলতে শুরু করল। তিনি চোখ বন্ধ করলেন। আকাশে যখন উড়ল প্লেনটা, তখন চোখ মেললেন। দেখলেন, নিচে সাদা মেঘ দেখা যাচ্ছে। তাজউদ্দীন এখন মেঘের ওপরে। কী আশ্চর্য।

তাঁদের প্লেন নামল নদীর মধ্যে।

তারপর একসময় দরজা দেওয়া হলো খুলে। তাজউদ্দীন প্লেন থেকে নেমে একটা বোটে উঠলেন।

আহ্‌, কী সুন্দর এই নদীবক্ষ, নীল জলে ঢেউয়ের খেলা, কী সুন্দর এই উদার আকাশ, নীল দিগন্ত, সাদা বালুচর, কাশবনে সবুজের ঢেউ।

ভাসানী তাজউদ্দীনকে দেখে বললেন, ‘আইসো। এক নৌকা থাইকা আরেক নৌকায় উঠতে পারো তো মিয়া, নাকি?’

এটি অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৮ তে প্রকাশিত কথাসাহিত্যিক ও কবি আনিসুল হকের ‘আলো-আঁধারের যাত্রী’ উপন্যাসের একটি অংশ। ইতিহাসআশ্রয়ী এই উপন্যাসের কাহিনি বাংলাদেশের ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত উত্তাল সময়ের প্রেক্ষপটে এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের নায়কদের নিয়ে লেখা এ বইয়ে ইতিহাস প্রেক্ষাপট হিসেবে এলেও এটি ইতিহাস নয়; উপন্যাস।

এ উপন্যাসের বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, এই কাহিনি রচনার সময় বিভিন্ন বই থেকে উদার হাতে গ্রহণ করা হয়েছে। কোথাও কোথাও তা সরাসরি উদ্ধৃতির পর্যায়েই চলে গেছে। কোথাও-বা পুনর্লিখন করা হয়েছে মাত্র। বইটা উপন্যাস বলে তথ্যসূত্র দেওয়া হয়নি। আশা করি, বিজ্ঞ ও বিবেচক পাঠক এই ব্যাপারটিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যে এক দিনে আসেনি, এক বছরেও নয়, এই কাহিনি তা মনে করিয়ে দেবে আবারও। আমাদের স্বাধীনতার মহান যাত্রী, অভিযাত্রী ও অধিকানয়কদের জানাই সালাম।

প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইটির প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী হাজরা। ২৩২ পৃষ্ঠার এ উপন্যাসের দাম রাখা হয়েছে ৪৮০ টাকা।

‘প্রথমা প্রকাশন’ থেকে প্রকাশিত গুণী এ লেখকের আরও ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস হলো- যারা ভোর এনেছিল (২০১২) এবং ঊষার দুয়ারে (২০১৩)।বইগুলো মেলা থেকে ২৫% ও রকমারি থেকে ২৭% ছাড়ে এটি কেনা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *