তিনি রাজধানী মালে’তে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এমন সব তথ্য পাচ্ছি যাতে জাতীয় নিরাপত্তা সঙ্কটে পড়বে। জানা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্টকে অভিশংসিত অথবা তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতে রুল ইস্যু করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠান এরই মধ্য এই বার্তা পেয়েছে। যদি পরিস্থিতি তা-ই হয় তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আমরা অনুরোধ করবো সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক রুল যেন তারা মেনে না নেয়। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, মাত্র তিন দিনের মধ্যে দ্বিতীয় একজন পুলিশ প্রধানকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন। বিরোধীরা মনে করছে এর মাধ্যমে সরকার সহিংসতা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু উল্টো দেশের সঙ্কট আরো ঘনীভূত হচ্ছে। এখন থেকে তিন দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট বিরোধী ওই ৯ নেতার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে মুক্তির নির্দেশ দেয়। কিন্তু সরকার তাতে মোটেও কর্ণপাত করছে না। বিরোধী দলীয় ওই নেতাদের মধ্যে রয়েছেন মালদ্বীপে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদ। তিনি বর্তমানে নির্বাসনে বসবাস করছেন বৃটেনে। মুক্তির নির্দেশ দেয়া আরো একজন বিরোধী নেতা এখন নির্বাসনে রয়েছেন। বাকি সাতজনকে রাখা হয়েছে মালদ্বীপের সবচেয়ে বড় জেলখানায়। এটি মাফুশি দ্বীপে অবস্থিত। ওদিকে আদালতের নির্দেশ মেনে বিরোধী নেতাদের মুক্তি দাবি করে রাজধানীতে র্যালি করেছে কয়েক শত মানুষ। আন্তর্জাতিক সংগঠন ও পশ্চিমা দেশগুলোও ইয়ামিনকে চাপ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ মেনে নিতে। ওদিকে দেশটির পার্লামেন্টের ১২ জন সদস্যের সদস্যপদ কেড়ে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু আদালত তাদেরকে সেই পদে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছে। ওই ১২ জন এমপি গত বছর ইয়ামিনের ক্ষমতাসীন দল থেকে পদত্যাগ করেন। সব কিছু মিলে মালদ্বীপের নিয়ন্ত্রণ এখন আবদুল্লাহ ইয়ামিনের জন্য বড় ধরনের একটি হুমকি হয়ে উঠেছে। ২০১৩ সালের নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নাশিদকে পরাজিত করে ইয়ামিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তবে নাশিদের সমর্থকরা বলেন, ওই নির্বাচন ছিল জালিয়াতির। ওদিকে বিরোধী নেতাদের মুক্তির নির্দেশের বিষয়ে ইয়ামিন শনিবার দলীয় এক সভায় বলেছে, সুপ্রিম কোর্ট এমন রায় দেবে তা তিনি প্রত্যাশাও করেন নি। তিনি বলেছেন, এ নিয়ে আমরা সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। রাষ্ট্রের জটিলতা ও উদ্বেগের বিষয়ে আলোচনা করতে বসেছি আমরা। আমরা আদালতের রায়ের প্রতি এমন ভাবে সম্মান দেখাতে চাই যে, তাতে জনগণের যেন কোনো ভোগান্তি না হয়। ওদিকে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট ওই রায় দেয়ার অল্প পরেই প্রেসিডেন্ট মোহামেদ ইয়ামিন তার পুলিশ প্রধানকে বরখাস্ত করেন। এরপর যে ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ প্রধান হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন, তাকে বরখাস্ত করেন শনিবার। একই সঙ্গে মাফুশি জেলখানার পরিচালকও শনিবার পদত্যাগ করেছেন।