আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। জনগণকে অবাধে ভোট দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। জনগণ পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তন অন্য কোনোভাবে নয়, পরিবর্তন আসতে হবে ভোটের মাধ্যমে। তারা (সরকার) বিএনপিকে মাইনাস করে নির্বাচন করতে চায়। এসব করে তারা কীভাবে এককভাবে নির্বাচন করবে তার ষড়যন্ত্র করছে।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছয়টি শর্ত দিয়েছেন।
এর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতি চলবে না, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে, নির্বাচনের আগে ‘অবৈধ সংসদ’ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ করতে হবে, জনগণকে ভোটকেন্দ্রে আসার মতো পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
সভায় ছয় শর্ত দেওয়ার পর খালেদা জিয়া নির্বাহী কমিটির সদস্যদের কাছে জানতে চান তারা এর সঙ্গে একমত কি না। এ সময় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা উচ্চ স্বরে বলেন একমত।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের আগে আজকের এই সভা থেকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে বিএনপির চেয়ারপারসন জরুরিভাবে দলের সর্বোচ্চ ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে আগামী দিনের জন্য কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি। দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আভাস পাওয়া গেছে, তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মতামত নিয়েই পরবর্তী সময়ের কর্মসূচি দিতে চান বিএনপির চেয়ারপারসন।
জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় কেন্দ্রীয়, জেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় সাতশ নেতাকর্মীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ শেষে আদালত আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ঘোষণা করেছেন। এ মামলায় খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন-মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
রায়ের দিন ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন, যার ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজনৈতিক অঙ্গন। প্রায় প্রতিদিনই বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।