আব্দুল্লাহ আল মামুন, গাজীপুর অফিস: অতীতের সকল ইউএনও থেকে অনেকটা ভিন্ন শ্রীপুর উপজেলার বর্তমান নির্বাহী অফিসার রেহেনা আক্তার কলি। জনসেবার করতে গিয়ে চেয়ার ছেড়ে তৃনমূলেও মিশে গেছেন তিনি গণমাধ্যমে কোন মানবিক সংবাদ দেখে তাৎক্ষনিক অসহায়দের কাছে তার ছুটে যাওয়ার মানষিকতা সাধারণ মানুষকে অবাক করেছে। “জনসেবার জন্য প্রশাসন” এই শ্লোগানকে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহসী এই নারীর ভুমিকা ইতোমধ্যে বেশ আলোচিত হচ্ছে শ্রীপুরে।
সম্প্রতি গ্রামাবাংলানিউজের গাজীপুর অফিসের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুনের মুখোমুখি হন এই উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
সহজ সরল ভঙ্গিতে বলে ফেলেন অনেক কথা। জনসেবায় নিবেদিত সাহসী এই নারী ইউএনওর কথোপকথন থেকে তৈরী প্রতিবেদন তুলে ধরা হল।
শ্রীপুর উপজেলা গাজীপুর জেলা তথা বাংলাদেশের একটি অন্যতম উপজেলা। ৪৬৫.২৫ বর্গ কিঃ এই উপজেলাটি শীতলক্ষ্যা, বানার নদী, ধাত্রী নদী ও কাওরাইদ নদীকে ঘিরে সবুজ শিল্পায়নে সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলায় ২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী মহিলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন রেহেনা আকতার কলি। নির্বাহী অফিসার পদে যোগদানের আগে তিনি বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। রেহেনা আকতার কলি ঢাকা ইউনিভার্সিটি হতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অনার্স মাস্টার্স শেষ করে ২০০৮ সালের ১৬ নভেম্বর রাজশাহী বিভাগে চাকুরীতে যোগদান করেন পরে তিনি স্থানান্তর হয়ে জয়পুর হাটে দুই বছর তিন মাস দায়িত্ব পালন করে নারায়াগঞ্জ জেলা প্রসাশকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেন এবং সেখান থেকে কমিশনার ভূমি হিসেবে ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলায় এক বছর পাঁচ মাস দায়িত্ব পালন তিনি যোগদান করেন সিলেটের হবিগহঞ্জ জেলা প্রসাষকের কার্যালয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে।
জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি শ্রীপুরের প্রত্যেকটি জায়গায় আলোর ছোঁয়া দিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে শ্রীপুর উপজেলার প্রতিবন্ধীদের নিয়ে তিনি একটি সংগঠন করার উদ্যোগ নিয়েছেন যেখানে ভাসমান প্রতিবন্ধীরা আলোর মূখ দেখতে পাবে। সংগঠনির নাম নবধারা সংগঠন করা হবে এখানে তাদের শিক্ষাসহ শারীর যেসমস্ত সাপোর্ট প্রয়োজন তার ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। এছাড়া উপজেলার কেওয়া চন্নাপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পটি অবহেলিত অবস্থায় ছিল যার সকল কার্যক্রম সম্পর্ণ্য করা হয়েছে, এখানে বাচ্চাদের পাক প্রাথমিক শিক্ষাসহ আরবী শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে এবং বয়স্ক ভাতা-বিদবা ভাতাসহ মহিলাদেরকে পরিবার পরিকল্পনার আওতায় নিয়ে আসারও চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের জন্য প্রত্যেককে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিশ হাজার টাকা করে লোন দেওয়া হয়েছে যা দিয়ে তারা কেউ কেউ ভ্যান-রিক্সা ক্রয় করেছে, কেউ কেউ দোকানে মালামাল ক্রয় করেছে, আর মহিলাদেরকে সিলাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সিলাই মেশিনও বরাদ্ধ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, উপলেজায় বিগতদিনে শিল্প ও সংস্কৃতির কোন ব্যবস্থা ছিলনা, বর্তমানে উপজেলায় শিল্পকলা একাডেমি করা হয়েছে যার ফলে এখন বিভিন্ন স্কুলের বাচ্চারা এখন বিভাগীয় পর্যায়ে ভিবিন্ন প্রতিযোগীতায় অংশ নিচ্ছে। তিনি বলেন সবচেয়ে বড় একটি কাজ আমরা করতে সক্ষম হয়েছি যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস স্বাক্ষী বিজয় গাঁথা প্রকাশনাটি আমরা বাংলাদেশের সমস্ত লাইব্রেরীসহ চল্লিশটি মন্ত্রনালয় এবং উপজেলার প্রত্যেকটি স্কুলে পৌছাতে সক্ষম হয়েছি। রেহেনা আকতার বলেন, শ্রীপুরের দুটি স্থানে যুদ্ধ হয়েছিল ইজ্জতপুর ও সাতখামাইর এই দুটি স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনা করা হয়েছে এবং উপজেলায় একটি ঘন কবরের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেহেনা আকতার বলেন, শিল্পাঞ্চল অধ্যুষিত শ্রীপুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেও সমৃদ্ধ। সুন্দর প্রকৃতি ও ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি এবং আমি আশা করছি ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শ্রীপুরের সর্বস্তরের মানুষ আমাদের পাশে থাকবে।