ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের পরের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রতিযোগিতা শুরু হয় মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই।
চিফ অব স্টাফ রিন্স প্রিবাস, চিফ স্ট্রাটেজিস্ট স্টিভ ব্যানন এবং ট্রাম্পের জামাই জ্যারেড কুশনারের লড়াই ছিল চিফ অব স্টাফের প্রকৃত ক্ষমতা ধরে রাখা। আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই চাইছিলেন না একক কাউকে এই দায়িত্ব অর্পণ করতে।
অন্যদিকে এই দ্বন্দ্বের বিপরীতে একেবারেই নির্লিপ্ত ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে লেখা ‘ফায়ার এন্ড ফিউরি:ইনসাইড দি ট্রাম্প হোয়াইট হাউস’ বইতে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বইতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প যখন রাতে তার বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ করতেন তখন তার কর্মকর্তাদের নানা ত্রুটি ও দুর্বলতার কথা বলতেন। যেগুলো ধীরে ধীরে গণমাধ্যমে আসতে শুরু করে। তিনি বলতেন, ব্যানন অবিশ্বাসী, প্রিবাস দুর্বল আর কুশনার চুষে খাচ্ছে। সিন স্পাইসার একটা নির্বোধ, কনওয়ে ছিচকাঁদুনে আর ইভানকার ওয়াশিংটনে আসাই উচিত হয়নি। ট্রাম্পের আলাপের কারণেই হোয়াইট হাউসের ভেতরের খবর মুক্তভাবে প্রকাশ হতে থাকে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একক কর্তৃত্ব ও কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষমতা ধরে রাখার লড়াইয়ে কোনঠাসা মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। বইতে বলা হয়েছে, সকল প্রশাসনে অন্তত ক্লিনটন ও আল-গোরের পর থেকে ভাইস প্রেসিডেন্টদের এক ধরনের স্বাধীন ক্ষমতা ছিল। অথচ ট্রাম্পের প্রশাসনে পেন্স যেন কেউই না, এক গুরুত্বহীন চরিত্র। হাসি মুখে উপস্থিতি জানান দেওয়া ছাড়া তিনি কিছুই করেন না।
দেখে মনে হয়, তিনি নিজের ক্ষমতা প্রয়োগের বিষয়টি এড়িয়ে চলেন, নয়তো তিনি এই ক্ষমতা আকড়ে ধরতে অক্ষম। রিপাবলিকান হিলের সাবেক এক সহকর্মীকে পেন্স নিজেই বলেছেন, আমি শুধু শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতাগুলো করি আর ফিতা কাটি। ডেপুটি চিফ অব স্টাফ ওয়ালশের মতে, ঝড়ো পরিবেশের মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্টের দফতরই শান্ত।
পেন্স তার যেকোন ভাষণের শুরুতে বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষ থেকে আপনাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এর মাধ্যমে তিনি দর্শকদের চেয়ে ট্রাম্পকেই বেশি অভিবাদন জানান। পেন্স নিজেকে এমন অনাগ্রহী হিসেবে পেশ করেন যে, তিনি ট্রাম্পের ছায়াতলে রয়েছেন।
ট্রাম্পের মেয়ে ও জামাই’য়ের কাছে পেন্স খুবই হাস্যরসের পাত্র। তাদের মতে, পেন্স অদ্ভুতভাবে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়ে খুশি। ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বটাই পালন করে তিনি সন্তুষ্ট, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব হয় এমন কিছু করেন না। ভাইস প্রেসিডেন্টের এই ধৈর্য্য ও বিনয়ের জন্য ট্রাম্পের মেয়ে ও জামাই পেন্সের স্ত্রী কারেন’কে কৃতিত্ব দেন।