হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: সিলেটে নির্বাচনের অনেক আগেই বইছে নির্বাচনী আমেজ। ব্যানাল, লিফলেট, বিলবোড ও নববর্ষের শুভেচ্ছা কার্ডের মাধ্যমে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারনা। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা এখন থেকেই প্রচারনায় মাঠ গরম করে রেখেছেন।
আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের অধীনে সিসিক নির্বাচনের এখনো পাচঁ মাসের মতো সময় বাকী রয়েছে। কিন্তু পাচঁমাস বাকী থাকলেও সিলেটে সিসিক নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা প্রচারনায় নেমেছেন অনেক আগে থেকেই। নির্বাচনের অনেক আগেই নির্বাচনী আমেজ বইতে শুরু করেছে পুরো সিটি কর্পোরেশন এলাকায়।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জুন মাসের মধ্যে সিলেট সিটির নির্বাচন আয়োজনের তোড়জোড় শুরু করার খবর প্রচারের পর সরগরম হয়ে উঠেছে সিসিক নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের প্রচারনা।
এছাড়া বিএনপি নেতৃত্বাধীন জামাতে ইসলামীর সিলেট মহানগর আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের সিসিক নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘোষণা দেওয়ায় সিলেটের বিএনপি ঘরনার রাজনৈতিক অঙ্গনে বইছে আলোচনার ঝড়। যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপির সাথে কোন সমঝোতা না হয় এবং তিনি নির্বাচনে থাকেন তবে বিএনপি প্রার্থীর জন্য আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পাশাপাশী নিজ জোটের প্রার্থীর সাথে লড়তে হবে।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীরা এবার দলীয় মনোয়ন ও প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন। বিশেষ করে বড় দুই দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপিতে এখন গ্রুপিং লবিং তুঙ্গে। দুই দলে একাধিক নেতা মনোয়ন লড়াইয়ে নামায় দলীয় কোন্দল ও বাড়ছে। মনোয়ন প্রতাশী নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে কাদা ছোড়াছুড়ি। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের বক্তব্য-বিবৃতিতে দলীয় রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।
সিসিক নির্বাচনে আওয়ামীগের মনোয়নের জন্য মাঠে নেমেছেন দলটির মহানগর কমিটির সভাপতি, সাবেক দুইবারের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ও কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ।
এছাড়াও ক্ষমতাসীন দলের মনোয়ন প্রত্যাশী তালিকায় আছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সদস্য ও সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম। দলীয় পদে না থেকেও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক পরিচিত। এবার সিসিক নির্বাচনে তিনিও আওয়ামীলীগের মনোয়ন চাইবেন বলে তার ঘনিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।
তবে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা জানান, আওয়ামীলীগের মনোয়ন নিয়ে মূল লড়াইটা হবে কামরান ও আসাদের মধ্যে।
অন্যদিকে বিএনপির মনোয়ন দৌড়ে রয়েছেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। তবে দলীয় মনোয়ন পেতে জমজমাট লড়াই হবে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমের মধ্যে।
এদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামীর মহানগর সিলেট মহানগর আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের প্রার্থীতা ঘোষনা করায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে চলছে তুমুল আলোচনা। এহসানুল মাহবুব জুবায়ের শেষ পর্যন্ত প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করলে বিএনপির মনোয়ন যেই পান তাকে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পাশাপাশী লড়তে হবে জামায়াতের প্রার্থীর বিপক্ষে, ফলে লড়াইটা হবে ত্রিমুখী।
অন্যদিকে ১৮ দলীয় জোটের দোহাই দিয়ে গতবার জামায়াত প্রার্থী প্রত্যাহার করলেও এবার কোনভাবেই ছাড় দিতে রাজী নয় তারা।
এছাড়া খেলাফত মজলিস প্রার্থী মাওলানা সিরাজুল ইসলাম সিরাজী নির্বাচনের লক্ষে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাই মেয়র পদের এই লড়াইয়ে কে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হবেন সেটি দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পর্যন্ত।