বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তিন ছাত্রীকে ইভটিজিং ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার ঘটনায় দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দিতে বিশ্ববিদ্যালটির তিন শিক্ষককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর এবং বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের যৌথবেঞ্চ তিন বছর আগের ওই ঘটনা নিয়ে করা এক রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানিকালে এ আদেশ দেন।
তলবের আদেশ পাওয়া তিন শিক্ষক হলেন- তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান, কমিটির সদস্য ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদ হেলালী ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ। তিন শিক্ষককে আগামী ২৪ জানুয়ারি স্বশরীরে হাইকোর্টে গিয়ে তাদের দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। বুয়েটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৌমেন কর্মকার। রিটকারী তিন ছাত্রীর আইনজীবী ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন জানান, ২০১৫ সালে আবেদনকারী তিন ছাত্রী বুয়েটে ভর্তি হন। ইউনিভার্সিটির প্রথম দিনে ‘র্যাগিং ডে’ পালন করা হয়। সেখানে এক ছাত্র তাদের উত্যক্ত ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এর পর তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নোটিশ ছাড়াই ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। এক পর্যায়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উত্যাক্তের শিকার ছাত্রীদেরকে ভুল স্বীকার করতে ও মিথ্যা কথা বলতে বাধ্য করা হয়। এর পর ওই অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রীরা ভুল স্বীকার করে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ২০১৫ সালের ৩ জুন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ভুল স্বীকার করার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক টার্মের (১৮ মাসের) জন্য তিন ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং সারা জীবনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে বহিষ্কার করে। পরবর্তীতে তিন ছাত্রী বহিষ্কারের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬ সালে হাইকোর্টে রিট করা হয়। সে বছর ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষের বহিষ্কারের আদেশ স্থগিত করে। পাশাপাশি ওই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়। এ অবস্থায় ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেখানে দেখা যায়, ছাত্রদের ইভটিজিংয়ের ঘটনা সত্য। তবুও প্রশাসন ছাত্রীদেরকে শাস্তি দিয়েছে। এর পরই ওই তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে তদন্ত কমিটির তিন শিক্ষককে আদালতে তলব করা হয়েছে।