লুকনো যৌন সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আনতে চাননি। তাই এক পর্নস্টারের সঙ্গে লক্ষাধিক ডলারের বিনিময়ে ‘চুক্তি’ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, সেই পর্নস্টার স্টেফানি ক্লিফোর্ডের মুখ বন্ধ করতে ১ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ করেছিলেন ট্রাম্প। ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই ওই ‘চুক্তি’ হয় বলে শুক্রবার ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সেখানে লেখা হয়েছে, ২০০৬ সালে গল্ফের মাঠে একটি ইভেন্টে গিয়ে স্টেফানি ক্লিফোর্ডের সঙ্গে পরিচয় হয় ট্রাম্পের। মার্কিন অভিনেত্রী স্টেফানি-র পর্নস্টার হিসাবেও খ্যাতি রয়েছে। মেলানিয়ার সঙ্গে বিয়ে হওয়ার এক বছর আগেই এই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ট্রাম্প। সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। ট্রাম্প-স্টেফানির সম্পর্ক নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা ছিল না। কেউ কিছু জানতেনও না।
কিন্তু, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর দৌড়ে ট্রাম্পের নাম ঘোষণার পর থেকেই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা শুরু হয় গোটা দুনিয়া জুড়ে। স্টেফানি ছাড়াও বহু নারীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ এবং যৌন সম্পর্কের কথাও প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। সেই সময়ে সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে কথা বলতে শোনা যায় ওই পর্নস্টারকে।
এমনিতেই তাঁর বহুগামিতা বিভিন্ন মহলে রীতিমতো চর্চার বিষয়। তাঁর মধ্যে পর্নস্টারের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের কথা জানাজানি হলে নির্বাচনে প্রভাব পড়তে পারে। সেটা অনুমান করেই স্টেফানির মুখ বন্ধ করতে চান ট্রাম্প। আর তাতে প্রাথমিক ভাবে সফলও হন তিনি। এ জন্য ১ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ করতে হয় তাঁকে। আর ঘটনাটি ঘটে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক এক মাস আগে ২০১৬-র অক্টোবরে।
ট্রাম্প অবশ্য সরাসরি এ বিষয়ে স্টেফানির সঙ্গে কথা বলেননি। ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেনের সঙ্গে কথা হয় স্টেফানির আইনজীবী কেইথ ডেভিডসনের। লস অ্যাঞ্জেলেস-এ সিটি ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা জমা পড়ে। এমনটাই দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
যদিও গোটা ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। স্টেফানির মুখ বন্ধ রাখার অভিযোগ যে সম্পূর্ণ মিথ্যা, তা প্রমাণ করতে ওই পর্নস্টারের সই করা একটি নথিও ওয়াল স্ট্রিটের দফতরে পাঠিয়েছেন ট্রাম্পের আইনজীবী কোহেন। কোহেনের দাবি, স্টেফানির সই করা ওই নথি থেকেই স্পষ্ট, ‘মুখ বন্ধ’ রাখার জন্য তিনি ট্রাম্পের কাছে থেকে কোনও টাকা নেননি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই শুক্রবার দুপুরে হোয়াইট হাউস থেকে এক বিবৃতি দেওয়া হয়। তাতে জানানো হয়, এই কথাগুলো পুরনো। এর আগেও এ ভাবে সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়েছে। বছর দুয়েক আগে নির্বাচনের সময়েই ট্রাম্প এ কথাগুলো অস্বীকার করেছেন বলেও জানানো হয় ওই বিবৃতিতে। পাশাপাশি কোহেন শুক্রবার অভিযোগ করেন, ‘‘ওই জার্নালটি (ওয়াল স্ট্রিট) গত এক বছর ধরে ভুয়ো খবর ছাপছে।’’
যদিও এই প্রথম নয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কয়েক দিন আগে এই ওয়াল স্ট্রিট জার্নালেই ট্রাম্পের এমন ‘কীর্তি’র কথা ফলাও করে ছাপা হয়েছিল। সেখানে লেখা হয়েছিল, ন্যাশনাল এনকুইরার নামে একটি ট্যাবলয়েডের মুখ দেড় লাখ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে বন্ধ করার চেষ্টা করেন ট্রাম্প। তার জেরেই অভিনেত্রী কারেন ম্যাকডউগালের সঙ্গে ট্রাম্পের যৌন সম্পর্কের কথা ছাপায়নি ওই ট্যাবলয়েড।