উন্নয়ন এগিয়ে নিতে চাই সবার সহযোগিতা

Slider জাতীয়
grambanglanews24.com
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী

সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচিগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন কর্মসূচিগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়, সে জন্য সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে দরকার।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব জেলা-উপজেলায় উন্নয়ন মেলার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। দেশের ৬৪ জেলার ৪৯২টি উপজেলায় বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিন এই মেলা চলবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মেলায় আজকে যারা সম্পৃক্ত রয়েছেন তাদেরকে বলব, যে কাজগুলো আমরা করতে পেরেছি এবং যে কাজগুলো ভবিষ্যতে করার পরিকল্পনা নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, সেগুলো সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা দরকার।’ তিনি বলেন, ‘এই উন্নয়ন যেন অব্যাহত থাকে সেই লক্ষ্য নিয়েই এই উন্নয়ন মেলার সূচনা।’

প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে বরগুনা, ঝিনাইদহ, হবিগঞ্জ, গাইবান্ধা ও চাঁদপুরের স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলেন এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করেন। এ সময় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর পাশে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া, এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো.আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই উন্নয়ন মেলা নিয়ে একটি ভিডিও তথ্যচিত্র পরিবেশিত হয়।

অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নটা হচ্ছে সার্বিকভাবে সকল জনগণের জন্য। আর বিশেষ করে আমাদের গ্রামের মানুষের জন্য। আমরা প্রতিটি গ্রামকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই; চলাফেরার জন্য রাস্তাঘাট উন্নত করতে চাই। উন্নয়ন মানে হচ্ছে জনগণের উন্নয়ন। গ্রামের মানুষ, তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের উন্নয়ন। এই উন্নয়ন হচ্ছে সার্বিকভাবে (দেশকে) বিশ্ব দরবারে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ আমরা বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হব; যে স্বপ্ন একদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন।’

ভিডিও কনফারেন্সে চাঁদপুরের এক মত্স্যজীবী প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘কারেন্ট জাল যারা বিক্রি করে, জাল যারা তৈরি করে, তাদেরকে ধরে না। জেলেদের ধরে।’ মত্স্যজীবীদের সন্তানদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ কোটা রাখার অনুরোধও জানান তিনি। এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা কারেন্ট জাল তৈরি করে ও বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ এ সময় চাঁদপুরবাসীকে ‘চাঁদমুখ’ সম্বোধন করে নিজের শৈশবে স্টিমারযোগে পদ্মা-মেঘনা ঘুরে বেড়ানোর নানা স্মৃতি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

বরগুনায় আশ্রয় প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগী একজনের সঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. মোখলেসুর রহমানকে জেলায় কিছু অগ্রসর দ্বীপ চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, সেখানে জাহাজ নির্মাণ শিল্প গড়ে তোলার ইচ্ছা রয়েছে সরকারের। বরগুনায় পর্যটনের উন্নয়নেও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।

ঝিনাইদহের মর্জিনা বেগমের সঙ্গেও কথা বলেন শেখ হাসিনা। ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে মর্জিনা এখন একটি ছোট মুদি দোকান চালান। শেখ হাসিনা বলেন, কোনো জেলার প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা এক দিনের বেতন দিয়ে তহবিল করে ভিক্ষুক পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিলে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকেও সেখানে অর্থ দেওয়া হবে।

হবিগঞ্জে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের একজন উপকারভোগী এবং একজন চা শ্রমিকের সঙ্গেও ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গাইবান্ধার সরকারি ভাতাভোগী ও মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আগামী মাসেই বালাসী ঘাট ও বাহাদুরাবাদ ঘাটের মধ্যে পুনরায় ফেরি পারাপার শুরু করার কথা জানান তিনি। এই পথে যমুনা নদীর তলদেশে ভূগর্ভস্থ পথ তৈরির একটি পরিকল্পনাও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় জানায়, ঢাকায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তৃতীয়বারের মতো শুরু হওয়া উন্নয়ন মেলার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি মাঠে শুরু হওয়া উন্নয়ন মেলায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, জরিপ অধিদপ্তর ও আবহাওয়া অধিদপ্তর অংশগ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ উন্নয়ন মেলায় আসা দর্শনার্থীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস জনগণের কাছে সহজভাবে পৌঁছানোর জন্য বিএমডি ওয়েদার অ্যাপস সম্পর্কে মেলায় দর্শনার্থীদের জানানো হয়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি সংস্থাসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ, অধিদপ্তর ও অন্যান্য সংস্থার মোট ৭৫টি স্টল এ মেলায় রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *