মহা ধুমধামে ‘পাগলের মেলা’

Slider বিচিত্র সিলেট

e3c7059bf6345b922336ff64b3ca0ce1-sunamgonj

 

 

 

 

আসল নাম সিদ্দিক মিয়া। বয়স ষাটের কাছাকাছি। কিন্তু এলাকায় তাঁর পরিচিতি ‘সিদ্দিক পাগল’ হিসেবে। নামের সঙ্গে ‘পাগল’ জুড়ে ডাকলেও খারাপ লাগে না তাঁর। এই সিদ্দিক পাগল ভাবেন অন্য ‘পাগলদের’ নিয়েও। তাই তিন বছর ধরে তাঁর গ্রামে ‘পাগলের মেলা’র আয়োজন করছেন তিনি।

সিদ্দিক মিয়ার বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কলাগাঁও গ্রামে। তিনি কৃষিকাজ করেন।

অন্য বছর ঘরোয়াভাবে গান-বাজনা আর খাওয়াদাওয়া হলেও এবার তিনি এই মেলা করেছেন বড় করে। গ্রামের মাঠে বসেছিল দোকানপাট।

গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার এই ‘পাগলের মেলা’ হয়েছে কলাগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। এতে ‘পাগল’ ছাড়াও এলাকার কৌতূহলী মানুষের উপস্থিতি ছিল।

সিদ্দিক মিয়া বলেন, পাগল-ফকিরদের সঙ্গেই তাঁর চলাফেরা বেশি। এসব মানুষকে নিয়ে তো কেউ ভাবে না। তাই তিন বছর ধরে এই মেলার আয়োজন করছেন তিনি। এতে এলাকার যত পাগল আছে সবাইকে দাওয়াত দেন। পাশাপাশি অন্যরাও আসেন। দুই দিন তিনিই খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এর জন্য এলাকার মানুষও তাঁকে সহযোগিতা করেন।

মাইজভান্ডারির ভক্ত সিদ্দিক আলী বলেন, ‘এইটা ওরস ও পাগল মেলা—দুইটাই বলতে পারেন। সারা রাত গান-বাজনা, জিকির আসকার হয়। পাগলদের নিয়ে তো আর কেউ ভাবে না। আমি এক পাগল, তাই অন্য পাগলদের কথা ভাবি।’

এলাকার ছাড়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বাবা ভান্ডারির মুরিদ, সিদ্দিক পাগলও বাবা ভান্ডারির মুরিদ। এক পাগলের ডাকে আরেক পাগল না আইসা পারে?’ কলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, এবার মেলায় কিছু দোকানপাটও ছিল। মানুষও হয়েছে বেশি। মঙ্গলবার সারা রাত গান-বাজনা হয়েছে। বুধবার দুপুরে মেলা হয়। সিদ্দিক আলী মাইজভান্ডারির নামে তিন বছর ধরে এই মেলা ও শিরনি বিতরণের আয়োজন করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসেন মিয়া নিজেও মঙ্গলবার রাতে সিদ্দিক পাগলের অনুষ্ঠানে ছিলেন। তিনি বলেন, আগে নিজের ঘরেই ওরস ও গান-বাজনার আয়োজন করতেন সিদ্দিক আলী। এবার মাঠে করেছেন। লোকসমাগমও বেশি হয়েছে। এতে সিদ্দিক পাগলের পরিচিত পাগল-ফকির আসেন বেশি, তাই অনেকে এটাকে পাগলের মেলা বলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *