দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করেছিল বীর বাঙালি। দেশ স্বাধীন হলেও যাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা, সেই অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন পাকিস্তানের কারাগারে অন্তরীণ। ফলে স্বাধীনতা এলেও নেতার অনুপস্থিতিতে অপূর্ণতা থেকে গিয়েছিল বিজয়ের গৌরব উদ্যাপনে। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রাখেন। সেই থেকে দিনটি পালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে।
কালের আবর্তে আজ আবার ফিরে এল সেই ঐতিহাসিক স্মৃতিময় দিন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন দল ও সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ছয়টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল সাতটায় জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন এবং বেলা তিনটায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা। দিবসের আলোচনা বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ফলে দেশের স্বাধীনতা সুসংহত হয়। দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু বৈষম্যহীন সমাজ গড়াসহ অনেক স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। তবে সেই বাংলাদেশে এখনো ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বাড়ছে। এমন মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভার বক্তারা। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র ‘সেদিনের স্বপ্ন, আজকের বাস্তবতা’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে। সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। আলোচনা করেন কলামিস্ট ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মো. ফরাসউদ্দিন। এ ছাড়া সভায় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা, প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীর শাহাবুদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।