ভারতীয় দন্ডবিধির যে ৩৭৭ ধারা সমকামী যৌনতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে, সেই ধারাটির বৈধতাই পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট আজ ঘোষণা করেছে।
ব্রিটিশ জমানার এই বিতর্কিত আইনটির সুবাদে ‘অপ্রাকৃতিক যৌনতা’র অপরাধে ভারতে কোনও ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদন্ড পর্যন্ত হতে পারে, তবে সুপ্রিম কোর্ট এখন বলছে অধিক সংখ্যক বিচারপতির এক সাংবিধানিক বেঞ্চ এখন এটি খতিয়ে দেখবেন।
ভারতে সমকামী ও তৃতীয় লিঙ্গভুক্তদের অধিকার অর্জনের জন্য যারা আন্দোলন করছেন, তারা সুপ্রিম কোর্টের এদিনের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন – তবে ৩৭৭ ধারা বিলোপ করার প্রশ্নে ভারতে বর্তমান সরকারের কী ভূমিকা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
ভারতে এলজিবিটি শ্রেণীভুক্ত পাঁচজন ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা তাদের আবেদনে বলেছিলেন, ভারতীয় দন্ডবিধির সেকশন ৩৭৭ এমন একটি আইন যে কারণে সব সময় তাদের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতে হয় – কারণ তাদের যৌনতার দোহাই দিয়ে পুলিশ যখন খুশি তাদের গ্রেফতার করতে পারে।
সেই পিটিশনের শুনানিতেই প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র-র নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ আজ বিষয়টি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী আনন্দ গ্রোভার মনে করছেন, বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি হলে রায় অবশ্যই তাদের পক্ষে আসবে। দেড়শো বছরেরওে বেশি পুরনো এই আইনের বিরুদ্ধে তারা আরও দু-এক বছর লড়তে প্রস্তুত বলেও জানাচ্ছেন তিনি।
আর যেহেতু এই সুপ্রিম কোর্টই সম্প্রতি ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে – তাই ৩৭৭ ধারা বিলোপের প্রশ্নে তাদের সওয়ালও অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে থাকবে বলেই তার অভিমত।
সুপ্রিম কোর্টের এদিনের পর্যবেক্ষণে ভারতে এলজিবিটি সম্প্রদায় নতুন আশায় বুক বাঁধছেন ঠিকই – আর এই আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় মুখ আদিত্য ব্যানার্জি মনে করছেন এখান যে বিচারপতিদের মানসিকতার যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে সেটাই আসলে সবচেয়ে ইতিবাচক দিক।