“হাওরে তীব্র শীতে ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট বাড়ছে”

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি সিলেট
grambanglanews24.com
grambanglanews24.com
আল-আমিন আহমেদ, সুনামগঞ্জ :-
দরিদ্র, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য শীতকাল বড় কষ্টের। শীতকাল আসলেই দরিদ্র অসহায় মানুষ শীতে প্রচুর কষ্টপায়।তাদের  খাবারের চেয়েও শীত নিবারণ অতীব প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
শৈত্যপ্রবাহের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার ন্যূনতম ব্যবস্থাপনাও তাদের থাকে না। যার ফলে অসহায় ও হতদরিদ্রদের কষ্ট কেবল বেড়েই যায়। বৃদ্ধ, শিশু ও ফুটপাতের গরিব মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে মারাও যায়।
এমনই এক অাসহায়, সম্বলহীন লোক সুলতান মিয়া(৬০)। তাঁর কোনো পুত্র সন্তান নেই।সে এবং তাঁর স্ত্রী জোসনা বানু (৪৯)কে নিয়ে তার সংসার গড়ে তুলেছে সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর থানার বংশীকুন্ডা দক্ষিন ইউনিয়নের আদর্শগ্রামে। সে মধ্যনগর থানার মোহাম্মদ আলীপুর বাজার কেয়া ঘাটের মাঝি। জীবিকার তাগিদে প্রচন্ড ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে বৈঠা হাতে নিয়ে চলছে তার জীবন যুদ্ধ। গেল কয়েক দিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ বেড়েই চলছে। যার ফলে সুনামগঞ্জের হাওরে অকাল বন্যায় শতভাগ ফসল হানির ফলে অনেক পরিবার তার পরিবারের সদস্যদের শীতবস্ত্র কিনে দিতে পারছেনা। অনেক পরিবার খরখুঁটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে। এমনই দৃশ্যটি ক্যামেরায় ধরা পড়ে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর থানার নতুন বাজারে। ধর্মপাশা উপজেলা দূর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অদিদপ্তরের তথ্য সূত্রে, প্রথম পর্যায়ে শীতার্ত মানুষদের জন্য সাড়ে চার হাজার কম্বল সরকার থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তা ধর্মপাশা উপজেলার দশটি ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরন করা হয়। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য।
ঐ এলাকার কৃষক মো: ইদ্রিছ আলী জানান, বরো ফসলের জমি চাষ করা হলেও গেল কয়েকদিন ধরে তা রোপন করতে পারছিনা। কোনো কৃষক ফসল রোপনের জন্য মাঠে যাচ্ছেনা। যার ফলে মারাত্নক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে চাষীরা।
চামরদানী ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের কৃষক মঞ্জু সরকার জানান, এই শীতে আমাদের পর্যাপ্ত শীতের কাপড় না থাকার কারনে বিরাট কষ্টে আছি সরকার থেকে কোনো সহযোগিতা পায়নি। হাওর কবি জীবন কৃষ্ণ সরকার জানান,প্রতিবছরই শৈত্য প্রবাহের কারণে  আমাদের হাওরাঞ্চলে পৌষ -মাঘ মাসে অসহায় হাওরবাসীরা অত্যন্ত দুর্ভোগ পোহায়।এমন সময়ে সরকারের তরফ থেকে যেটুকু সহায়তাই আসুক সেটা গ্রহণ করার পাশাপাশি সমাজে যারা বিত্তবান রয়েছে তারা যদি একটু শীতার্তদের পাশে দাঁড়ায় তবে অবশ্যই হাওরবাসীর দুর্দশা একটু হলেও লাঘব হবে।
বংশীকুন্ডা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণধন সরকার বিদ্যুৎ বলেন,এখনতো আমরা হাওরের মানুষ প্রচুর কষ্টে আছি। আমি মনে করি ২০১৮ সালে এসে শীত তার যৌবন ফিঁড়ে পেয়েছে।
বংশীকুন্ডা দক্ষিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ জানান, আমার ইউনিয়নে তিনশত কম্বলের বরাদ্দ ছিল।সেগুলো  বিতরন করা হয়েছে।যা আমার এলাকাবাসীর জন্য অপ্রতুল। তাই আরোও কম্বলের প্রয়োজন।তবুও জনবান্ধব সরকারের প্রতি আমাদের আস্থা রাখতে হবে। সেই সাথে আমাদের দেশের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও বিত্তবান ব্যক্তিদের এই অসহায় শীতার্ত মানুষের পাশে সহযোগীতার হাত বাড়ানোর জন্য বিনীত আহবান জানাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *