চট্টগ্রাম: লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ আলী হায়দার ও নির্মূল আজ সোমবার লেবাননের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম নৌ জেটি ত্যাগ করেছে।
এ সময় কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল রিয়ার এডমিরাল কাজী সারোয়ার হোসেন, (ট্যাজ) (সিডি), এনসিসি, পিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাহাজ দুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানান। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে নৌবাহিনীর পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাগণ, জাহাজে গমনকারী কর্মকর্তা ও নাবিকদের পরিবারের সদস্যবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
UNIFIL (United Nations Interim Force in Lebanon) মিশনের আওতায় মাল্টি ন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সে দীর্ঘ চার বছর দায়িত্ব পালনরত বানৌজা ওসমান এবং মধুমতিকে প্রতিস্থাপন করবে নৌবাহিনীর আধুনিক যুদ্ধজাহাজ আলী হায়দার ও নির্মূল।
উল্লেখ্য, লেবানন ও ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় টহলের কাজে নিয়োজিত থেকে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ওসমান ও মধুমতি আগামী ১৪ জুন ২০১৪ তারিখ সফলভাবে দায়িত্ব পালন শেষে প্রত্যাবর্তন করবে।
মিশনে যোগ দিতে নৌবাহিনী জাহাজ আলী হায়দার এর অধিনায়ক ক্যাপ্টেন এম আনোয়ার হোসেন, (এনডি), এএফডব্লিউসি, পিএসসি, বিএন এবং বানৌজা নির্মূল এর অধিনায়ক কমান্ডার তানজিম ফারুক, (এনডি), পিএসসি, বিএন এর নেতৃত্বে সর্বমোট ৩০ জন কর্মকর্তা এবং ২৯০ জন নাবিক লেবাননের উদ্দেশ্যে গমন করেন।
লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ২০১০ সালের মে মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ প্রেরণ শান্তিরক্ষা মিশনে নতুন মাত্রা যোগ করে।
এ লক্ষ্যে নৌবাহিনী জাহাজ ওসমান এবং মধুমতি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় সাত হাজার নটিক্যাল মাইল পথ অতিক্রম করে ভূমধ্যসাগরে মাল্টি ন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সে যোগদান করে। এ মিশনে বাংলাদেশ ছাড়াও জার্মানী, তুরস্ক, গ্রীস, ব্রাজিল এবং ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জাহাজ মোতায়েন রয়েছে।
এ ধরনের উন্নত আধুনিক দেশের নৌ বহরের সাথে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ যোগদানের বিষয়টি বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য অত্যন্ত গৌরবের।
উল্লেখ্য, এশিয়া মহাদেশ হতে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া এ মিশনে অংশগ্রহণ করে এশিয়া তথা উন্নত বিশ্বের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে যা বাংলাদেশের জন্য গৌরবের বিষয়।
মেরিটাইম টাস্কফোর্সের অংশ হিসেবে নৌবাহিনীর জাহাজ দুটি লেবাননের ভূ-খন্ডে অবৈধ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে দক্ষতার সাথে কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি লেবানীজ জলসীমায় উক্ত জাহাজ দুটি মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফট এর ওপর গোয়েন্দা নজরদারী, দূর্ঘটনা কবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবানীজ নৌসদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ করছে।
UNIFIL শান্তিরক্ষা মিশনে যোগদানের পর থেকে ওসমান ও মধুমতি জাহাজ দুটি ভূমধ্যসাগরে নিরবিচ্ছিন্নভাবে টহলদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ভাবমূর্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। প্রতিস্থাপিত আধুনিক এই যুদ্ধজাহাজ দুটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের ফলে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের পরিচিতি ও সুনাম বহুগুণে বৃদ্ধির পাশাপাশি এ খাতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে।