মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির উদ্যোগে সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের ওপর সেনা নির্যাতন বন্ধ করতে হবে এবং রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত নিয়োগ দিতে হবে।
রোববার সাধারণ পরিষদে এ প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে প্রস্তাবের পক্ষে পড়ে ১২২ দেশের ভোট। বিপক্ষে ১০টি ভোট। ভোটদানে বিরত ছিল ২৪টি দেশ।
আগের অন্যান্য উদ্যোগের মতো এবারও মিয়ানমারের পক্ষাবলম্বন করল চীন ও রাশিয়া। তারা ওআইসির প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে থাকা অন্যতম দেশগুলো হলো কম্বোডিয়া, লাওস, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, বেলারুশ, সিরিয়া ও জিম্বাবুয়ে।
রোহিঙ্গা নির্যাতন ইস্যুতে শুরু থেকেই সোচ্চার জাতিসংঘ। সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ সহিংসতাকে ‘জাতিগত নিধনের উদাহরণ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটির আয়োজন করা হয়েছিল। গত নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দেওয়ার আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধ ও মানবাধিকারকর্মীদের প্রবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন কয়েক মাস আগে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মিয়ানমারের অধিকাংশ প্রতিবেশী তাদের পক্ষে ভোট দেয়। সিরিয়া এখন রুশ ঘনিষ্ঠ। ফলে রাশিয়া ভোট অনুসরণ করেই তারা নিজেদের ভোট দিয়েছে।
গৃহীত প্রস্তাবে মিয়ানমার ইস্যুতে জাতিসংঘের বিশেষ দূত নিয়োগের জন্য সংস্থাটির মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এর আগে জাতিসংঘের বাজেট কমিটি বিশেষ দূত নিয়োগের অর্থায়নের ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে।
সম্প্রতি মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতিবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ইয়াংহি লিকে তাঁর মেয়াদকালে সেখানে যেতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে দেশটি। তাঁকে কোনো সহযোগিতাও করবে না মিয়ানমার। মিয়ানমার যে সে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় জাতিসংঘকে সহযোগিতা করবে না, সে বার্তা আবারও দিল।
এরপরই সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব গৃহীত হলো সাধারণ পরিষদে।
গত ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় প্রাণে বাঁচতে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।