সিলেট প্রতিনিধি :: সুরমা নদীর ভয়াল গ্রাসে ভাঙ্গছে নদীর পাড়, বাড়ছে নদী পাড়ের মানুষের কান্না। সুরমা ভাঙ্গনে বিলিনের পথে পিরপুর গ্রামের অধিকাংশ এলাকা। সুরমা নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ ভাঙনের ফলে আতঙ্কে আছেন মানুষ। পীরপুর গ্রামের শতাধিক পরিবারের এলাকায় সুরমা নদীর ভাঙনে প্রতিরক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে বাঁধের বেশ কিছু অংশ নদে বিলীন হয়েছে। পানি বাড়লেই যেকোন সময় পাড়টি সম্পূর্ণ ভেঙে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে আছেন এলাকার মানুষ।
সিলেট সদর উপজেলার ৬নং টুকেরবাজার ইউপির ২নং ওয়ার্ডের পীরপুর গ্রামের শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর সুরমা নদীর ভাঙ্গনের কবলে নিশ্চিন্ন হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে উক্ত গ্রামের ধন মিয়া ও মাসুক মিয়া, শানুরী বেগম, আমিন উদ্দিন, আব্দুস সালাম, সাবুল উদ্দিন, জুনেদ আহমদ, মকবুল হোসেন, আকতার হোসেনসহ অনেকের বাড়িঘরসহ নদী ঘাটের সিঁড়ি ভাঙ্গনের মুখে পতিত হয়ে তলিয়ে গেছে সুরমা নদীতে।
এদিকে ১নং ওয়ার্ডের চরুগাঁও সহ আরো কিছু অংশ পানি কমার সাথে সাথে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এ ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে পীরপুর ও গৌরীপুরের শত-শত পরিবারের বাড়ী-ঘর নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে সুরমা নদীর ভাঙ্গনের খবর পেয়ে ভাঙ্গনকৃত এলাকা পরিদর্শন করেন সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশফাক আহমদ, ৬নং টুকের বাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুস শহীদ, উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে খবর পেয়ে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শণ করেছেন সিলেট পানি উন্নয়ন বোডের কর্মকর্তারা। পরিদর্শনকালে সকলেই এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ জনগণকে শান্তনা দিয়ে বলেন, যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে নদী ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এর সাথে তারা নদীপারে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। কিন্তু উল্লেখিত ব্যক্তিরা পরিদর্শনের প্রায় সপ্তাহ চলে গেলেও নেওয়া হয়নি প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ। ফলে প্রতিদিনই নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে এলাকার নতুন-নতুন বসত বাড়ি।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবার অর্থমন্ত্রী সিলেট সফরে আসলে নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা জন্য অনুরুদ করেন এলাকাবাসী।
পীরপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল রিপন জানান, দীর্ঘদিন থেকে পিরগ্রামের অর্ধেক বসতি নদীর করাল গ্রাসে বিলিন হয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে ভাঙ্গনের মাত্রা।
স্থানীয়রা বলেন, পরিকল্পিতভাবে এই ভাঙন রোধ না করলে গোটা পীরপুর গ্রামের মানচিত্র পরিবর্তন হয়ে যাবে। ফলে প্রতিদিনই নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে এলাকার বসত ঘরবাড়ি।
২নং ওয়াডের মেম্বার এনাম হোসেন বলেন, শিঘ্রই নদীর ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পীরপুর গ্রাম সুরমার কবলে বিলিন হয়ে যাবে। সাথে সাথে সিলেট-সুনামগঞ্জ রাস্তাটি এক সময় নদীর সাথে বিলিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
তিনি আরও বলেন আমাদের অর্থমন্ত্রীর নিজ নির্বাচানী এলাকা হিসাবে জনগণকে রক্ষা করা দায়িত্ব আমি মনে করি-আশা করি তিনি এসে ভাঙ্গের স্থান পরিদর্শন করে সরকারের মাধ্যামে পীরপুর গ্রাম সুরমার কবলে বিলিন থেকে রক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ কার দাবী জানান।
নদীর পাড়ে গ্রামবাসী বিভিন্ন স্থানের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামতে সম্প্রতি সুরমা নদীর পাড়ে ঘরবাড়ী রক্ষার দাবী মানববন্ধন করেছে পীরপুর গ্রামবাসী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন , মুরব্বী মো: আব্দুর রুউফ, মো: মাসুক আহমদ, মো: ধান মিয়া, হাজী মিসবাহ উদ্দিন, হাজী জালাল উদ্দিন, হাজী আব্দুল হক মাষ্টার, আরও উপস্থিত ছিলেন, আব্দুল রকিব, এস কে শাহীন, খালেদ আহমদ ফারুক আহমদ, সাহেদ আহমদ, কাউছার আহমদ, সুমন আহমদ, শামীম মিয়া, ময়না মিয়া, হাবিবসহ এলাকার মুরবাবী যুবক ও মহিলাসহ নদীতে বাড়ী-ঘর নদী গর্ভে বিলিন থেকে রক্ষার দাবী মানববন্ধনে শত-শত মানুষ।