আর্সেনিক বিষে আক্রান্তদের ওষুধ

Slider লাইফস্টাইল

11ead582d1d01c18178da8c444cb0dd5-5a28a1bd91cc7

 

 

 

 

বাংলাদেশে আর্সেনিক বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত (আর্সেনিকোসিস) রোগীদের চিকিৎসায় অবহেলার যে চিত্র প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছে, তা সত্যিই হতাশাজনক। আক্রান্ত ব্যক্তিরা তিন বছর ধরে ওষুধ পাচ্ছেন না। অথচ এ নিয়ে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগই নেই।

বুধবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আর্সেনিকের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় মাঠপর্যায়ে কোনো ওষুধ নেই। ২০১৪ সালের জুলাই মাসের পর আক্রান্ত ব্যক্তিরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ওষুধ পাননি। সরকারি কর্মসূচির মাধ্যমে আর্সেনিকোসিস রোগীদের কোনো ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বড়ি ও মলম দেওয়া হয়নি। কিন্তু এ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারও কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না।

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে পাঁচ বছরমেয়াদি স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি খাত প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পে ২০১৭ সালের বাজেটে আর্সেনিকোসিস রোগীদের ওষুধ কেনার জন্য ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু বছর শেষ হয়ে এলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওষুধ কেনার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ ধরনের গাফিলতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আর্সেনিক একটি মারাত্মক বিষাক্ত পদার্থ, যা নানা উৎসের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানিকে সহজে দূষিত করে। আর্সেনিক মিশ্রিত পানি পান করলে নানা ধরনের রোগব্যাধি হয়। আর্সেনিক মানবদেহে প্রবেশ করে হাত ও পায়ের ত্বকের নানা রোগ সৃষ্টি করে। এ ছাড়া মানুষের যকৃৎ, ফুসফুস, কিডনি, পরিপাকতন্ত্র ও মূত্রথলির ক্ষতিসাধন করে। দীর্ঘদিন আর্সেনিক মিশ্রিত পানি পান করলে মানুষের মৃত্যু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, আর্সেনিকের কারণে বাংলাদেশে বছরে ৪৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তাও সরকার নির্বিকার!

সরকারকে এ ব্যাপারে অবশ্যই নজর দিতে হবে। আর হেলাফেলা করার সুযোগ নেই। আর্সেনিকোসিস রোগীদের চিকিৎসায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। আর্সেনিকোসিস রোগীদের মাঝে দ্রুত ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি আর্সেনিকের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে আক্রান্ত এলাকাগুলোতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। পরীক্ষা করে যেসব এলাকায় আর্সেনিক ধরা পড়বে, সেখানে আর্সেনিক দূরীকরণ পদ্ধতি বা নিরাপদ পানির সংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের পানি ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহিত করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *