বিষধর গোখরোর সঙ্গে খেলছে শিশুরা, কিন্তু তারা ছোবল মারছে না!

Slider বিচিত্র

215315Cobra_Plays_kid

 

 

 

 

 

কবি সুনীল তার কবিতায় বলেছিলেন ‘তিন প্রহরের বিল’ নামে এক স্বপ্নীল জলাশয়ের কথা যেখানে পদ্মফুলের মাথায় সাপ আর ভ্রমরেরা খেলা করে। তবে এখানে বাস্তবে ভয়াবহ বিষাক্ত পদ্মগোখরো খেলা করছে শিশুদের হাতে, কারও বা পেঁচিয়ে আছে গলা।

সাপের ভঙ্গিতে নেই কোনো আক্রমণাত্মক ভাবের প্রকাশ!

Cobra_bite

 

 

 

 

সাধারণত আশপাশের সামান্যতম শব্দ বা শরীরে কারও স্পর্শ পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ফণা তুলে ছোবল মারতে উদ্যত হয় বিষাক্ত গোখরো বা গোক্ষুর। কিন্তু যেই কালফণীকে দেখে অতি সাহসী লোকও লাফিয়ে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে দাঁড়ায়- তেমন প্রাণীকে প্রায় দুগ্ধপোষ্য শিশুরা হাতে নিয়ে খেলছে, বিরক্ত করছে নানাভাবে। অথচ সাপগুলো যেন শান্ত খরগোশের মতো আচরণ করে। এমন দৃশ্যও দেখা যায়! কালের কণ্ঠের পাঠকদের জন্য তেমনি কিছু দুর্লভ ছবি এখানে দেওয়া হলো।

Cobra_with_Kids

 

 

 

 

 

জায়গাটির নাম কাপারি গ্রাম। এর অবস্থান ভারতের উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার  দূরের শংকরগড়ে। বাসিন্দারা বংশপরম্পরায় সাপকে নিজেদের পরিবারের সদস্যের মতোই প্রতিপালন করে এসেছে। এখন তো বলা যায় বুকে হাঁটা এই প্রাণীটি তাদের যাপিত জীবনের অচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। গ্রামটিকে সাপুড়েদের গ্রাম বলেই জানে সবাই।

সাপই গ্রামের অধিকাংশের জীবন-জীবিকার উপায়। কার ঘরে কতোটি পোষা সাপ আছে তা দিয়ে কে কতোটা ‘সম্পদশালী’ তা বিবেচনা করা হয়।

Kids_play_snakes

 

 

 

 

 

এখানকার শিশুরা সাধারণত কোনো খেলনা নিয়ে খেলে না। তাদের খেলার সঙ্গী ভয়াবহ সব সাপ। কোনোমতে হাঁটতে পারে বা হাঁটতে এখনও শেখেনি- এমন শিশুকেও দেখা যায় বিষাক্ত সাপ নিয়ে খেলছে, নানানভাবে সাপকে জ্বালাতন করছে। কিন্তু সাপ রেগে-মেগে তাদের ছোবল দেয় না, একটু বিরক্তও হয় না।

এলাহাবাদ ছাড়াও একই প্রদেশের বাগপুর এলাকার যোগীডেরা গ্রামেও এমন দৃশ্য দেখা যায়। তবে যোগীডেরায় আর মাত্র একটি সাপুড়ে পরিবার আছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বংশ পরম্পরায় সাপের সঙ্গে জীবনযাপন করে গেলেও কাপারি গ্রামে আজতক সাপের ছোবলে কারও মৃত্যু হয়নি। গ্রামের বাসিন্দারা বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো গর্ব করে থাকে। তবে কেন বা কোন ‘জড়ি-বটির’ কারণে অতি তিরিক্ষি মেজাজের সাপগুলোও পোষা বেড়ালের মতো তাদের বশ্রতা স্বীকার করে থাকে সারাক্ষণ- এই গোমর জানায়নি তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *