ঝিনাইদহের বিভিন্ন গ্রামের গাছিদের খেজুর গাছ কাটা শুরু

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি খুলনা

khejur gas pic (1)

 

 

 

 

 
জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহের জেলার বিভিন্ন গ্রামের গাছিরা এখন খেজুর গাছ কাটতে শুরু করেছেন। ঝিনাইদহের আসাননগর, বোড়াই ও রাঙ্গিয়ারপোতা, কালীগঞ্জের মহেশ্বরচান্দা, কেয়াবাগান, কোলা, নিয়ামতপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরলে এখন খেজুর গাছ ছাঁটার দৃশ্য চোখে পড়ে। আগাম গুড় ও পাটালি উঠলে লাভও বেশ ভালোই হয়। সেই আশাতেই চলতি বছরও গুড় তৈরির দিকে ঝুঁকছে গাছিরা। সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের আশাননগন গ্রামের কৃষক সামছুল হক জানান, তিনি অনেক বছর থেকেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন। এ রস থেকে তিনি গুড় ও পাটালি তৈরি করে কালীগঞ্জ ও ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করে থাকেন। আগাম গুড় ও পাটালির দাম ভাল পাওয়া যায়। গত বছর তিনি ১০ কেজি ওজনের এক ঠিলা গুড় ৭০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

khejur gas pic (4)

 

 

 

 

 

 

 

একই গ্রামের খেজুর গাছি সামেদ জানান, চলতি বছর তিনি ৫০টি খেজুর গাছ কেটেছেন। আশা করছেন আগামী এক সপ্তাহ পর থেকেই প্রতিটি গাছ থেকে রস পাওয়া যাবে। গত বছর তিনি খেজুরের গুড় ও পাটালি বিক্রি করে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা লাভ করেন। চলতি বছর আরও বেশি দামে গুড় বিক্রির আশা করছেন।

khejur gas pic (7)

 

 

 

 

 

 

ঝিনাইদহে আনুমানিক তিন লাখ খেজুর গাছ রয়েছে। এর মধ্যে সদরের ১৭টি ইউনিয়নেই রয়েছে ৫০ হাজারের বেশি। সদর ইউনিয়নের কৃষকরা শীত মৌসুমে এসব গাছ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ কেজি গুড় উৎপাদন করে থাকেন। একই এলাকার খেজুর গাছি আঃ রহিম জানান, গত বছর ১০ কেজি ওজনের এক কলস গুড় উৎপাদন করতে খরচ হয়েছিল ৪০০ টাকা। আর বিক্রি করেছেন ৭০০ টাকায়। তবে জ্বালানির দামসহ আনুসাঙ্গিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছর খরচ আরও কিছু বেশি হতে পারে। এরই মধ্যে অনেক কৃষক গুড় তৈরির সরঞ্জাম এমনকি জ্বালানিও সংগ্রহ করে ফেলেছেন। আব্দুল মিয়া জানান, খেজুর রস থেকে গুড় তৈরির কাজ শুরু করতে প্রাথমিক সরঞ্জাম কলস ও জ্বালানি সংগ্রহ হয়ে গেছে। সরজমিনে গিয়ে সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের আসাননগর, বোড়াই ও রাঙ্গিয়ারপোতা, গ্রাম ও তার আশপাশের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই ব্যস্ত গাছিরা দা, ঠুঙি, দড়ি ও মাটির কলস (ভাড়) নিয়ে ছুটে চলেছেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে।

khejur gas pic (8)

 

 

 

 

 

 

গাছিদের প্রক্রিয়াজাত করা খেজুরের গুড়, পাটালি বা রস দিয়েই কয়েকদিন পরেই মুখরোচক পিঠা, পুলি, পায়েস তৈরির ধুম পড়বে গ্রামের গৃহস্থ বাড়িতে। শুধু কি তাই? খেজুরের গুড় বা রস দিয়ে তৈরি মুড়ি, চিড়ার মোয়া লেপমুড়ি দেওয়া শীতের সকালে খাওয়ার মজা তো উপভোগ করেন আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবাই। ঝিনাইদহের বন কর্মকর্তা জানান, বৃহত্তর যশোর জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় ১১ বছর আগে ঝিনাইদহে প্রায় লক্ষাধিক সৌদি খেজুর গাছের চারা রোপন করা হয়। এখন সেসব গাছ থেকেও রস উৎপাদন করছেন খেজুর। ইদানিং অন্যান্য চাষের পাশাপাশি কৃষকরা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও ব্যক্তিগত উদ্যোগে খেজুর গাছের কিছু চারা রোপন করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *