আন্তর্জাতিক চাপ কাজেই এল না?

Slider সারাবিশ্ব

032b4325470dc4a18580407c4900f049-5a1f6597a2d00

 

 

 

 

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো দীর্ঘদিন থেকে বলে আসছে, তারা উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেবে না কিংবা পরমাণু অস্ত্র সম্পন্ন হতে দেবে না। সম্ভাব্য সব ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ের ওপর জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

কিন্তু সব ধরনের বাধা উপেক্ষা করে নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কার্যক্রম চালিয়ে গেছে উত্তর কোরিয়া। আর গতকাল সফলভাবে এযাবৎকালের নিজেদের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পর পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হয়ে ওঠার দাবি করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন।

দেশটির এই পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করা এবং উদ্বেগ প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের।
বুধবার হাউয়াসং-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষা চালানো হয়, যা আট হাজার মাইল দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ক্ষেপণাস্ত্রটির কোনো ছবি প্রকাশ করেনি উত্তর কোরিয়া। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এ ক্ষেপণাস্ত্রটি বড় পরমাণু ওয়ারহেড বহনে সক্ষম।

ওয়াশিংটনভিত্তিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ ডেভিড রাইটের মতে, যে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়েছে তা কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, এর আশপাশের পুরো অঞ্চলে আঘাত হানতে সক্ষম। কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে পরমাণু ওয়ারহেড ছোড়ার পর সেটির কী হবে তা এখনো পরীক্ষা করা হয়নি। তাই উত্তর কোরিয়ার পরমাণু সক্ষমতার দাবি নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে আসার অবস্থা হয়নি।

উত্তর কোরিয়া বরাবরই বলে আসছে, দেশটির পরমাণু কর্মসূচি আলোচনায় বসতে বাধ্য করার জন্য নয়; বরং নিজেদের প্রতিরক্ষা ও সমান অবস্থানে থেকে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বোঝাপড়া করার জন্য। নিজের পরমাণু অন্য কোনো দেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে দাবি পিয়ংইয়ংয়ের, যতক্ষণ না ওই দেশটি তাদের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মিডেলব্যুরি ইনস্টিটিউটের পূর্ব এশিয়ার নিরস্ত্রীকরণ কর্মসূচির জ্যেষ্ঠ গবেষক ম্যালিসা হ্যানহ্যামের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো এখনো উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চাইবে না বলেই মনে হচ্ছে। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর বলতে বাধ্য হয়েছেন, উত্তর কোরিয়া বিশ্বের সব জায়গার জন্যই হুমকি হয়ে উঠেছে।
সর্বশেষ পরীক্ষার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে বসার কথা ছিল। কিন্তু এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে, আন্তর্জাতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞা উত্তর কোরিয়ার ওপর কোনো কার্যকর প্রভাব ফেলতে পারেনি।

উত্তর কোরিয়া ২০০৬ সাল থেকে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করার পর এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় পরীক্ষাটি চালিয়েছে ৩ সেপ্টেম্বর। ওই পরীক্ষার সময় ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। যেটি ছিল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে চালানো পরীক্ষার চেয়ে ১০ গুণ শক্তিশালী। ৩ সেপ্টেম্বর যে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়, তা ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমায় ফেলা পরমাণু বোমাটির চেয়ে ছয় গুণ বেশি শক্তিশালী বলে ধারণা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *