ইতিহাস বিকৃত করতে চাইলে ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়———–প্রধানমন্ত্রী

Slider জাতীয়

00340b6d4d565f646b294c1577fded0e-5a10166f68182

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভাষণ প্রচারে যত বাধা এসেছে তত তা জাগ্রত হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না, কেউ মুছতে পারেনি। ইতিহাস বিকৃত করতে চাইলে ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা জাতির পিতার নাম মুছতে চেষ্টা করেছে, জানি না তাদের লজ্জা হয় কি না। ইউনেসকো বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর তাদের কি এখন লজ্জা হয় না, দ্বিধা হয় না। অবশ্য এরা বাংলাদেশে বাস করলেও এরা পাকিস্তানেরই প্রেতাত্মা।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। ইউনেসকোর ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে নাগরিক কমিটি এই সমাবেশের আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তিনটার দিকে সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেছেন। ৪টা ২০ এ বক্তব্য শুরু করেন তিনি। শেষ করে ৪টা ৫০ মিনিটে। প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতেই স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনে বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। স্মরণ করেন ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবারের সদস্য এবং জেলহত্যার শিকার ৪ জাতীয় নেতা।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তাঁর বক্তব্যে ইউনেসকো ও যে দেশগুলো ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধু সাতই মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে তাদের ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন, বিশ্বে স্বীকৃতি পাওয়া ভাষণগুলো ছিল লিখিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভাষণ লিখিত ছিল না। এই ভাষণের জন্য কোনো ‘নোটস’ ও বঙ্গবন্ধুর হাতে ছিল না। ৭ মার্চে ভাষণ দেওয়ার আগে সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বঙ্গবন্ধুকে আলাদা ডেকে নিয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মা, বাবাকে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন অনেকে অনেক কিছু বলছে। কিন্তু তুমি তাই বলবে যা তুমি ভালো মনে করো।’ প্রধানমন্ত্রী বাবাকে দেওয়া মায়ের এই পরামর্শকে শ্রেষ্ঠ পরামর্শ বলে উল্লেখ করেন।

দুপুর থেকেই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশে মানুষের ঢল নামে। আজ সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ, এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক ও ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যানার নিয়ে সমাবেশে আসতে শুরু করে। দুপুরের মধ্যেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে এ বিশাল উদ্যান। এখানেই ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শুনিয়েছিলেন স্বাধীনতার অমর সেই বাণী, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।’
সমাবেশস্থল সাজানো হয়েছে ১৯৭১ সালে ৭ মার্চের মতো করে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কৃত্রিম লেকে শোভা পায় পাটবোঝাই পাল তোলা নৌকা। আর নৌকার পালে আছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের বিভিন্ন অংশ। এসবের মধ্যে ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,’ ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা আল্লাহ’, ‘তোমাদের হাতে যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে’ লেখা ব্যানার।

জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবেশ। তারপর বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পাঠ হয়।

সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে পরিবেশিত হয় গান ও কবিতা। পরিবেশিত হয় রবীন্দ্র, নজরুল আর মরমি কবি লালন শাহের গান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *