আটকে আছে ড্রিম গার্লের বয়স!

Slider বিনোদন ও মিডিয়া সারাবিশ্ব

7854c761f3163aefc615911b8b626320-59e4a30ea904b

 

 

 

 

 

অনেকে বলেন, বয়স একটা সংখ্যামাত্র। বলিউডের অভিনেত্রী হেমা মালিনীকে দেখলে এ কথা বিশ্বাস হয়। আজ ১৬ অক্টোবর তাঁর ৬৯তম জন্মদিন। কদিন পরেই নানি হবেন। কিন্তু এখনো ‘ড্রিম গার্ল’ কত সজীব, কত তরুণ। জন্মদিনে তাঁর আত্মজীবনী ‘বিয়ন্ড দ্য ড্রিম গার্ল’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হচ্ছে। বইটি লিখেছেন সাংবাদিক ও প্রযোজক রাম কমল মুখার্জি। এক অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচন করবেন এ প্রজন্মের তারকা দীপিকা পাড়ুকোন। সেখানে বলিউডের অর্ধশত তারকা উপস্থিত থাকবেন। আগামী বছর হেমা মালিনী চলচ্চিত্রে তাঁর ৫০ বছর পূরণ করবেন বলেই আয়োজকেরা এমন অভিনব পরিকল্পনা করেছেন।

bcadf19f6a64eafb5deffefb9e7697ab-59e4a32f03870

 

 

 

 

 

 

‘তা ধিন ধিন না’ থেকে অভিনয়
নাচে পটু হেমা ভারতীয় সব ধরনের নাচে দক্ষ। পশ্চিমা ঘরানার কিছু নাচও জানা আছে। নাচ প্রথম প্রেম হলেও অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন ছোটবেলা থেকে। ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়াশোনা করে বই থেকে ছুটি নেন। ১৯৬৪ সালে নায়িকা হওয়ার জন্য যান তামিল পরিচালক সিভি শ্রীধরের কাছে। কিন্তু যথেষ্ট ‘স্টার ম্যাটেরিয়াল’ নয় বলে হেমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সিভি। পরে তাঁর জায়গায় নিয়েছিলেন জয়ললিতাকে। তামিল ছবি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও হেমা মালিনী প্রথম আলোচনায় আসেন তেলেগু ছবি ‘পান্ডাবা বনবাসামু’র (১৯৬৫) মাধ্যমে। এরপর বলিউডে ‘সোলে’, ‘সীতা ঔর গীতা’, ‘মিরা’, ‘কিনারা’, ‘সন্ন্যাসী’, ‘মেহবুবা’, ‘ড্রিম গার্ল’, ‘প্রেম নগর’, ‘খুশবু’র মতো ছবি দিয়েই প্রমাণ করেন তিনি ‘স্টার ম্যাটেরিয়াল’ কি না। অল্প সময়ে হয়ে ওঠেন ‘ড্রিম গার্ম’। ২০০০ সালে চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য ভারত সরকারের তাঁকে পদ্মশ্রী খেতাব দেয়।

2cfc6dbe71300436eb63dc5552475447-59e4a33b5f54a

 

 

 

 

ড্রিম গার্লের প্রেমিকেরা
নিজের আত্মজীবনীতে হেমা লিখেছেন, বলিউডের প্রয়াত অভিনেতা সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব ছিল তাঁর। সঞ্জীব অবশ্য ড্রিম গার্লকে বন্ধুর থেকে একটু বেশি ভাবতেন। হেমাকে নাকি তিনি বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। শোনা যায়, সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পর সঞ্জীবকে মদের নেশায় পেয়ে বসে। নায়ক জিতেন্দ্রও হেমার মন পেতে চেয়েছিলেন। পারিবারিকভাবে তাঁদের বিয়ের কথা কিছু এগোনোর পর হেমা সেই বিয়ে ভেঙে দেন। কারণ, তিনি তখন মন দিয়ে রেখেছিলেন তাঁর থেকে বয়সে অনেক বড় ধর্মেন্দ্রকে। কিন্তু ধর্মেন্দ্র তখন বিবাহিত, চার সন্তানের জনক। ধর্মেন্দ্রর প্রথম স্ত্রী তাঁকে তালাক দিতে রাজি হননি। আইন অনুযায়ী তাই হেমা-ধমেন্দ্র তখন বিয়ে করতে পারছিলেন না। অগত্যা নিজেদের ভালোবাসাকে সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বলিউডের এই দুই তারকা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এই ধর্মমতেই ১৯৭৯ সালে বিয়ে হয় তাঁদের। হেমা-ধর্মেন্দ্রর সংসারে দুই মেয়ে এশা দেওল ও অহনা দেওল। ধর্মেন্দ্রর আগের ঘরের সন্তান সানি দেওলের থেকে হেমা মালিনী বয়সে মাত্র ছয় বছরের বড়।

df8243bff423d8b7c6ec961fbab183c8-59e4a355016ca

 

 

 

 

 

 

 

ফ্যাশন আইকন হেমা
১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত শীর্ষ আয় করা নায়িকাদের মধ্যে হেমা মালিনী ছিলেন চার নম্বরে। তখন হেমা ছবিতে থাকা মানেই সিনেমা সুপারহিট। শুধু নাচ ও অভিনয় দিয়েই নয়, হেমা দর্শকদের মুগ্ধ করতেন তাঁর অসাধারণ ফ্যাশন সেন্স দিয়েও। সত্তর দশকে নায়িকাদের বেলবটম প্যান্ট পরার চল তিনিই প্রথম শুরু করেন। সে সময় তরুণীদের মধ্যে এই ফ্যাশন বেশ জনপ্রিয় হয়। বেলবটম প্যান্ট, ফুলহাতা শার্ট আর মাথায় লম্বা হ্যাট পরা হেমাকে যত মিষ্টি লাগত, ঠিক ততটাই তাঁকে আকর্ষণীয় দেখায় দক্ষিণ ভারতীয় কাতান শাড়িতে। এ অভিনেত্রীর শাড়ির সংগ্রহও বিশাল। আর সত্তর ছুঁইছুঁই বয়সেও হেমা এতটা তরুণ কীভাবে জানেন? প্রচুর পানি ও তাজা ফলমূল খেয়ে ত্বক সুন্দর রাখেন এই ভারতীয় অভিনেত্রী|

d19d89efccd49562a9bfb98765a46bd9-59e4a367812d3

 

 

 

 

 

 

 

বলিউড থেকে রাজনীতির মাঠে
হেমা মালিনী ১৯৯৯ সাল থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ওই বছর ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেন। ২০০৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেন হেমা মালিনী। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এ অভিনেত্রী রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। ২০১০ সালে তাঁকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বানানো হয়। চার বছর পর মথুরার জয়ন্ত চৌধুরীকে বিশাল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে লোকসভার সদস্য হন হেমা। নাচ, অভিনয়, সংসার কিংবা রাজনীতি, যখন যেই অঙ্গনে মন দিয়েছেন, সেখানেই সফল হয়েছেন চিরসবুজ তারকা হেমা মালিনী। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *