পাঁচ দফা প্রস্তাবেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব : প্রধানমন্ত্রী

Slider জাতীয়

171142Hasian2_kalerkantho_pic

 

 

 

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত মাসে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে তিনি যে পাঁচ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন তার মাধ্যমেই চলমান রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হবে।

তিনি আজ তাঁর (প্রধানমন্ত্রীর) ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান গ্রহণকালে বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না… আমরা বিশ্বাস করি আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংক-বিএবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর কার্যালয়ে অনুদানের চেক হস্তান্তর করে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যে ৫ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন সেগুলো হচ্ছে-

এক. মিয়ানমারকে অবশ্যই বিনাশর্তে রাখাইন রাজ্যে দ্রুত ও চিরতরে সহিংসতা ও জাতিগত নিধন বন্ধ করতে হবে।

দুই. জাতিসংঘ মহাসচিবকে দ্রুত মিয়ানমারে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

তিন. ধর্ম ও জাতি নির্বিশেষে মিয়ানমারের সকল নাগরিকের সুরক্ষা দিতে হবে। এ লক্ষ্যে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ে তুলতে হবে।

চার. বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।

পাঁচ. কফি আনান কমিশন রিপোর্টের সুপারিশ অবশ্যই বিনাশর্তে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার চার লাখ রোহিঙ্গার বোঝা বাংলাদেশ কয়েক দশক ধরে বহন করছে।

 

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মানবিক বিপর্যয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেকের দায়িত্ব … রোহিঙ্গাদের বিপর্যয়ের সময় আমরা যদি তাদের পাশে না দাঁড়াতাম তবে তা অমানবিক হতো। ’

দুস্থ মানবতার সহায়তায় এগিয়ে আসায় বিএবি’কে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ এসোসিয়েশন মানব কল্যাণে সবসময়ই তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, তারা সাম্প্রতিক বন্যার সময়ও জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। আজ তারা মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় দখলদার পাকিস্তানী বাহিনীর গণহত্যার কথা স্মরণ করে বলেন, রোহিঙ্গারা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী বাহিনীর নির্যাতনের মতো বর্বরতার শিকার।

তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১ কোটি মানুষ শরণার্থী এবং ৩ কোটি মানুষ গৃহহীন হয়।

১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাঁর এবং তাঁর ছোট বোনের শরণার্থী জীবনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘৬ বছর শরণার্থী হিসেবে থাকার কারণে আমরা রোহিঙ্গাদের দুঃখ ও যন্ত্রণা বুঝি। ’

নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় সর্বশ্রেণীর মানুষের এগিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের মানুষ মানবতাবোধ সম্পন্ন। তারা প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সহায়তা নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসামরিক প্রশাসন, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং তাঁর দলের স্বেচ্ছাসেবকরা এসব নিপীড়িত মানুষের ভোগান্তি লাঘবে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, তাদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে তাদের জন্য বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *