হাতটি দেখে খুশি মুক্তামণি

Slider নারী ও শিশু

0eeebc4dd58517d8030687df4381b42d-598d6bfef0953

 

 

 

 

 

 

 

মুক্তামণির হাতের সামনের দিকের ব্যান্ডেজ খুলে দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ব্যান্ডেজের ভেতরে হাতটি দেখা যাচ্ছে। দীর্ঘ কয়েক বছর মুক্তামণি ও তার পরিবার হাতটি এভাবে দেখেনি। কখনো দেখতে পাবে, তা ভাবেনি। ফলে আনন্দের মাত্রাটা একটু বেশি। অন্যদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকদের মুখেও হাসি ফুটেছে।

আজ রোববার চিকিৎসকেরা মুক্তামণির হাতের ব্যান্ডেজ খুলে দিয়েছেন। ১০ অক্টোবর এ হাতেই মুক্তামণির ঊরু থেকে চামড়া নিয়ে গ্রাফটিং বা চামড়া প্রতিস্থাপন করা হয়। মুক্তামণির হাতে ৫০ শতাংশ চামড়া লাগানো হয়েছিল, তা এখন হাতের সঙ্গে লেগে গেছে। দুই সপ্তাহ পর আবার গ্রাফটিং করে চামড়া লাগানো হবে।
মুক্তামণির হাতের ব্যান্ডেজ খোলার পর আজ সকালে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক আবুল কালাম, বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী চিকিৎসক সামন্ত লাল সেন ও অন্য চিকিৎসকেরা বার্ন ইউনিটের কেবিনে মুক্তামণিকে দেখতে যান।
সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘মুক্তামণির হাতে ৫০ শতাংশ চামড়া জোড়া লেগে গেছে। এখন হাত খানিকটা স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। হাতটি এ পর্যায়ে যে আসবে, তা ভাবতেই পারিনি। মুক্তামণিও বারবার তাকিয়ে হাতটি দেখছে। এ হাতটি তো সে বা তার পরিবার এত দিন দেখতে পায়নি। তবে এটা মনে রাখতে হবে, মুক্তামণির হাত শতভাগ ভালো বা স্বাভাবিক হবে না।’
হাতটি দেখার পর কেমন লেগেছে—এ প্রশ্নের উত্তরে মুক্তামণি ছোট করে বলে, ‘অনেক ভালো লেগেছে।’ তুমি তো একদম ভালো হয়ে গেছ—প্রতিবেদকের মুখে এ কথা শুনে মুক্তামণি একটু হেসে বলে, ‘তাই কি আর হয়? দেখি শেষ পর্যন্ত কী হয়।’
মুক্তামণি হাতটি এখন পর্যন্ত নাড়াতে পারছে না। তবে একটু পরপর তাকিয়ে দেখে। মুখে খেলে যায় খুশির ঝিলিক।
মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘মেয়ের হাত তো ভয়াবহ ছিল। এখন হাতে ঘা (অস্ত্রোপচারের জন্য) আছে, জায়গাটাও ফুলে আছে। তবে হাতটি যে এ অবস্থায় দেখতে পাব, তা কল্পনাও করি নাই।’
গত আগস্ট মাসে মুক্তামণির প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। ডান হাত থেকে প্রায় তিন কেজি ওজনের টিউমার অপসারণ করেন চিকিৎসকেরা।
সাতক্ষীরায় জন্মের পর দেড় বছর বয়স থেকে মুক্তামণির ডান হাতের সমস্যার শুরু। প্রথমে হাতে টিউমারের মতো হয়। ছয় বছর বয়স পর্যন্ত টিউমারটি তেমন বড় হয়নি। কিন্তু পরে তার ডান হাত ফুলে অনেকটা কোলবালিশের মতো হয়ে যায়। সে বিছানাবন্দী হয়ে পড়ে। মুক্তামণির রোগ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। গত ১১ জুলাই মুক্তামণিকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামণির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *