বিদেশী পেশাজীবী নিয়োগে বছরে ব্যয় ৬০০ কোটি ডলার

Slider সারাবিশ্ব
বিদেশী পেশাজীবী নিয়োগে বছরে ব্যয়  ৬০০ কোটি ডলার

বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনার নানা স্তরে কাজ করছেন প্রায় দুই লাখ বিদেশী পেশাজীবী। এসব পেশাজীবীর বেতনসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাবদ বছরে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। এছাড়া বিদেশী ক্রেতারা কথোপকথনে স্থানীয়দের চেয়ে বিদেশীদের সঙ্গে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করায় দেশী ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠানের উচ্চ ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে তাদের নিয়োগ দিচ্ছেন। পাশাপাশি স্থানীয় জনসম্পদের মধ্যে ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাবও রয়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চ ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে বিদেশীদের দখল বাড়ছে।

গতকাল রাজধানীতে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘লোকাল ম্যানেজারিয়াল ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’ শীর্ষক এক সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা এসব কথা বলেন।

ডিসিসিআইয়ের সভাপতি আবুল কাশেম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের সিইও এবিএম খোরশেদ আলম। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস ও এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ বাংলাদেশী বিদেশে কাজ করছেন। প্রবাসীদের আয় থেকে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয় বছরে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। কিন্তু দেশে বিদেশীদের কর্মসংস্থান বাবদ বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় হচ্ছে বছরে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার নানা স্তরে প্রায় দুই লাখ বিদেশী পেশাজীবী কাজ করছেন।

স্থানীয় মানবসম্পদের মধ্যে ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের সিইও এবিএম খোরশেদ আলম বলেন, আমাদের মানবসম্পদ কঠোর পরিশ্রমী, কিন্তু দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা শিল্পের চাহিদাভিত্তিক না হওয়া এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব জনবলকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ না দেয়ায় স্থানীয় মানবসম্পদে অদক্ষতা সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া বিদেশী বিভিন্ন ক্রেতা স্থানীয়দের চেয়ে বিদেশীদের সঙ্গে কথোপকথনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠানের উচ্চ ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে বিদেশীদের নিয়োগ দিচ্ছেন।

দেশে কর্মরত অনেক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ব্যবস্থাপক দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে উল্লেখ করে সভাপতির বক্তব্যে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি আবুল কাশেম খান বলেন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, রবি আজিয়াটা, সিটি ব্যাংক এনএ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের মতো আরো অনেক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে স্থানীয়রাই কাজ করছেন। তবে বর্তমান সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ অর্জন করতে হলে শিল্পায়নে স্থানীয় পেশাজীবীদের দক্ষতা বাড়ানোর বিকল্প  নেই।

দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিদেশীদের দখলকে উদ্বেগের বিষয় উল্লেখ করে উপস্থিত বক্তারা সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে উচ্চতর প্রশিক্ষণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যয়কে করের আওতামুক্ত রাখার জন্য সরকারের প্রতি সুপারিশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *