ঢাকা : রাজনৈতিক দলের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বাধ্যবাধকতা রাখার প্রয়োজন নেই বলে মনে করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। এই বিধান বাতিল, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালসহ নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ১১ দফা প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। আর নির্বাচনকালীন সরকার চাইলেও ঢালাওভাবে সেনা মোতায়েন না করাসহ ১৬টি প্রস্তাব দিয়েছে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।
আজ বৃহস্পতিবার ইসির সংলাপে আলাদাভাবে অংশ নিয়ে দল দুটি এসব প্রস্তাব তুলে ধরে।
সকালে ইসির সংলাপে অংশ নেয় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। ধর্মভিত্তিক এই দলটি হেফাজতে ইসলামের সঙ্গেও সম্পৃক্ত। এর নির্বাহী সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস ও মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী হেফাজতে ইসলামের নেতৃস্থানীয়। ২০০৮ সালে এই দলটি ইসির নিবন্ধন পায়।
দলটির মহাসচিব নূর হোছাইন কাসেমীর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়। তাদের অন্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে আছে নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় এক শতাংশ সমর্থনসূচক স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা বাতিল করা ইত্যাদি।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ২০২০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ বিষয়ে জমিয়তে ইসিকে দেওয়া লিখিত প্রস্তাবে এর বিরোধিতা করে বলেছে, তথাকথিত অনেক প্রগতিশীল দেশেও এ ধরনের আইন নেই। দলগুলো নিজেদের স্বার্থে সর্বস্তরের আস্থা অর্জনে নিজেদের প্রয়োজনেই নারী সদস্য করা ও তাদের দলের বিভিন্ন পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত-পদায়নে কাজ করবে। এ ব্যাপারে ইসির অতি উৎসাহ দেখানো বা অহেতুক বাধ্যবাধকতা আরোপের প্রয়োজন নেই।
বিকেলে সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি-জোট ছেড়ে যাওয়া এনপিপি। আম প্রতীক নিয়ে দলটি ইসির নিবন্ধন পেয়েছিল ২০০৮ সালে। এর নেতৃত্বে ছিলেন প্রয়াত শেখ শওকত হোসেন নীলু। ২০১৪ সালের আগস্টে দলটি বিএনপি জোট ছাড়লে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। একটি অংশ এখনো বিএনপি-জোটে আছে।
নীলুর মৃত্যুর পর তাঁর ভাই শেখ ছালাউদ্দিন দলটির চেয়ারম্যান হন। তাঁর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আজ সংলাপে অংশ নেয়। তারা জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিবন্ধিত দলগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার, সব দলের অংশ গ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা, অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা, প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়া, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের যোগ্যতা যাচাই, নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার না করার প্রস্তাব করে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে ইসি। এখন পর্যন্ত ১৮টি দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে।