যে কারণে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে অচলাবস্থা

Slider জাতীয়
যে কারণে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে অচলাবস্থা

ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকা, সাথে সীমাহীন দুর্ভোগ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে এমন চিত্র হর-হামেসাই দেখা যায়।

তবে ঈদ আসলে দুর্ভোগের পরিমাণ বেড়ে যায় বহুগুন। আর এই দুর্ভোগের মূল অন্তরায় পদ্মা নদীতে নাব্যতা।বর্ষা মৌসুমেও অসংখ্য ডুবোচরে কোরবানির ঈদের পর থেকে বড় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আর এরজন্য দায়ী করা হচ্ছে ড্রেজিংয়ের অব্যবস্থাপনাকে। এই সঙ্কট নিরসনের জন্যে সময় লাগবে আরো অন্তত সপ্তাহ খানেক। তবে দ্রুত সমস্যা সমধানের দাবি চালক ও যাত্রীদের।

সরেজমিন দেখা গেছে, পদ্মার পানি কমে আসছে। তবে স্রোত এখনো কমেনি। স্রোতের সঙ্গে পদ্মায় বয়ে আসছে পলি। এই পলি মাটি জমছে নদীর দুই পাড়ে। কোথাও কোথাও রয়েছে অসংখ ডুবোচর। আর সেই ডুবোচরে আটকে থাকতে হচ্ছে ফেরিগুলোকে। ফলে গত কয়েকদিনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে দেশের অন্যতম নৌরুট কাঠালবাড়ি-শিমুলিয়া ফেরি ঘাটে। ফলে বাধ্য হয়ে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট হয়ে যেতে হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলবাসীকে।

এতে ঘাট এলাকায় দেখা দিয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগ। এই দুর্ভোগের পিছনে দায়ী করা হচ্ছে ড্রেজিং অব্যবস্থাপনাকে। করিম খান নামে এক যাত্রী জানান, বছর বছর এই নদী খনন করা হয়। এরপর নাব্যতা সংকট থাকে। ড্রেজিংয়ে গাফলতির কারণেই এই নাব্যতা সংকটের সৃষ্টি হচ্ছে।

ফেরিচালকেরা জানান, চ্যানেলটির প্রবেশমুখ প্রশস্ত ও গভীরভাবে খনন করা হলে যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন হবে। তবে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলয়া নৌপথে নিয়মিত চলাচলকারী নৌযানের কয়েকজন চালকের অভিযোগ, পানি কমার সময় এই ড্রেজিংয়েই নদী পারাপারে বিপত্তি ডেকে আনে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চালক বলেন, লৌহজং চ্যানেল হয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য যেতে হয় জাজিরা প্রান্তের। মালামাল পরিবহনের জন্য চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না সিনোহাইড্রো কোম্পানি নিজেদের ড্রেজার দিয়ে নদী খনন করছে। নদীর তলদেশ দিয়ে পাইপ ঢুকিয়ে পলি মেশানো পানি চরের মাঝখানে ফেলে থাকে তারা। এতে ফেরি বা লঞ্চ চলাচলে অসুবিধা হয় না। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ এর ড্রেজারগুলো থেকে পলি ফেলে দেয় চরের ধারে কিংবা চ্যানেলের একেবারে মুখে। এ কারণে পলি আবারও জমে যায়। কাজের কাজ কিছুই হয় না। এ কারণেই কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে অচলাবস্থা।

নৌযানের এক ইঞ্জিন কর্মকর্তা জানান, চায়না সিনোহাইড্রোর চরের মাঝখানে পলি ফেলার সঙ্গে সঙ্গে চারপাশে পলিথিন দিয়ে দেয়। এর ফলে পলি নদীর পানিতে আর মিশে যায় না। চীনাদের তুলনায় বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজারগুলোর নদী খননের কাজ চলে ধীরগতিতে। তবে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, নদী খননের পর পলি ফেলার জায়গা নেই। তাই নদীর পাড়ে পলি ফেলতে হচ্ছে। এতে কোনো সমস্যা নেই।

ঘাট পরিদর্শনে এসে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব দেবাশীষ নাগ জানান, এই সংকট সমাধানের জন্যে বিআইডব্লিউটিএ-এর উদ্যোগে লৌহজং চ্যানেলের প্রবেশমুখে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছয়টি ড্রেজার খনন করছে। অল্প দিনের মধ্যেই সঙ্কট সমাধান হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *